আগরতলা, ১৫ অক্টোবর: রাজ্যে এখন শান্তির পরিবেশ কায়েম রয়েছে। উন্নয়নের জন্য শান্তি শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতির বাতাবরণই কাম্য। এটাই চায় মানুষ। রবিবার ৮ টাউন বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের একাধিক পুর ওয়ার্ডে আর্থিকভাবে দুর্বল অংশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে আয়োজিত শারদীয়ার বস্ত্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
এদিন এই বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৩, ৩৯ এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়কের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও তিনি। তাই পুজোর মরশুমে এলাকার গরীব অংশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়াস নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা। এই উপলক্ষে রবিবার পৃথক পৃথক সামাজিক কর্মসূচিতে সামিল হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার উদ্যোগে এদিন প্রথমে পুর নিগমের ৪০ নং ওয়ার্ড এলাকার গরীব অংশের মানুষের হাতে পুজোর বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। এজন্য বড়দোয়ালীর মধ্যপাড়ার নব অঙ্গিকার ক্লাব প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই ওয়ার্ডের অধীন ৮ টি বুথের প্রায় ৪০০ জন আর্থিকভাবে দূর্বল মানুষের মধ্যে বস্ত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার রাজ্যের সকল অংশের মানুষকে পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। সেই দিশায় কাজ করে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জি - ২০ উপলক্ষে ভারতকে বিশ্বগুরু হিসেবে সবার কাছে তুলে ধরেছেন তিনি। চন্দ্রযান সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছে। ভারতবর্ষকে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন তিনি। আমরা খুবই আনন্দিত এমন একজনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছি। নিরাপত্তার দিক থেকে বা সামাজিক দিক থেকে বা দেশের উন্নয়নে হোক সবকিছুতেই প্রধানমন্ত্রীর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এক্ট ইস্ট পলিসির মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি আমাদের হিরা মডেল দিয়েছেন। এরফলে রাজ্যে জাতীয় সড়ক, ইন্টারনেট, রেল যোগাযোগ এবং বিমান যোগাযোগ উন্নতি হচ্ছে। রাজ্যে এখন সবদিক দিয়েই উন্নয়ন হচ্ছে। ত্রিপুরা থেকে এখন প্রায় ১৭টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করছে। বাংলাদেশের সঙ্গেও রেল যোগাযোগ হয়ে যাবে। সাব্রুমের মৈত্রী সেতু চালু হলে এই অঞ্চল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম প্রবেশ দুয়ার হয়ে উঠবে। সেখানে স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে উঠবে। বাইরে থেকে এখন বিনিয়োগকারীরা ত্রিপুরায় আসতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সব মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চায় সরকার। উন্নয়নই এই সরকারের মূল লক্ষ্য। আগে মাত্র ৭০০ টাকা সামাজিক ভাতা দেওয়া হতো। কিন্তু এই সরকার আসার পর সেই ভাতা বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। নতুন করে আরো ৩০ হাজার মানুষকে সামাজিক ভাতা প্রদান করা হবে। আর এটাই সরকারের চেষ্টার ফল। বর্তমানে স্ব সহায়ক দলের মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন মা বোনেরা। এর পাশাপাশি স্বচ্ছ প্রশাসনের উপর গুরুত্ব তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন এডিনগর কমিউনিটি হলে ৩৯ নং ওয়ার্ডের মা-বোনেদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করেন বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রী। পরবর্তী সময়ে একই বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডেও অনুরূপ কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করেন তিনি।
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, কর্পোরেটর অভিজিত মল্লিক, বিশিষ্ট সমাজসেবী সঞ্জয় সাহা সহ অন্যান্যরা।
0 মন্তব্যসমূহ