আগরতলা, ২৪ নভেম্বর: ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। কিন্তু তাঁর অবদানকে যেভাবে মূল্যায়ন করার কথা ছিল সেটা হয় নি। তবে এখন মহারাজার অবদানের প্রকৃত মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এনিয়ে বিস্তৃতভাবে অবহিত করা হচ্ছে। যাতে আগামী প্রজন্মও এবিষয়ে জানতে পারে।
শুক্রবার রাজধানীর এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের মর্মর মূর্তির আবরণ উন্মোচন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
উদ্বোধকের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমবিবি কলেজ নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক, প্রফেসর সহ অতিথিদের মধ্যে অনেকেই এই এমবিবি কলেজের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী। বাইরে গেলেও এমবিবি কলেজের ছাত্রছাত্রী হিসেবে আমরা গর্ব অনুভব করি যে আমাদের এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই কলেজের সার্বিক পরিকাঠামো কোন অংশে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম নয়।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা আরো বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার গুণগত মানের প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। মহাবিদ্যালয়গুলির সার্বিক পরিকাঠামো ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের গুণগতমান ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপযুক্ত হলে আগামীতে বহিঃরাজ্যে যাওয়ার প্রবনতা অনেকাংশে কমে যাবে। তিনি বলেন এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিভিন্ন সময়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাত করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কোর্স সম্পর্কে অবহিত করেন। রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দপ্তর সবসময় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে থাকবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকার ও শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে যা যা সহায়তার প্রয়োজন সেটা দেওয়া হবে। যাতে এই মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় আর্ট অফ এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। বাউন্ডারি, স্টেডিয়াম ইত্যাদি পরিকাঠামোর উন্নয়নে সদর্থক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হবে। শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়নে রাজ্য সরকার এবারের বাজেটে প্রচুর আর্থিক সংস্থান রেখেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমবিবি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তাই এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে সরকার খুবই আন্তরিক। আগে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের অধীনে ছিল। পরবর্তী সময়ে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। যেটা এখন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। বর্তমানে ত্রিপুরা সরকারের অধীনে রয়েছে একমাত্র এই এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়। এর অধীনে রয়েছে আইন কলেজ, এমবিবি কলেজ ও বিবিএম কলেজ। রাজ্যের আরো অন্যান্য কলেজও যাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন হয় সেই আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর রাজ্যের জন্য যে কীর্তি স্থাপন করে গেছেন সেটা কখনো ভোলার নয়। ডা: সাহা বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এর মাধ্যমেই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলা সম্ভব হবে। মহারাজার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে এই সরকার সদা সচেষ্ট থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন মহারাজা চেয়েছিলেন এমন একটা বিদ্যাপত্তন হোক যেখানে মেডিকেল কলেজ, আর্টস, সায়েন্স, কমার্স ও অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ থাকে। সেই লক্ষ্য পূরণেই কাজ করছে সরকার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সত্যদেও পোদ্দার, শিক্ষা দপ্তরের সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড: সুমন্ত চক্রবর্তী, প্রফেসর মিহির দেব, প্রফেসর মানিক দেব সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ