Advertisement

Responsive Advertisement

ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে শিক্ষামূলক হাব রূপে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ৪ নভেম্বর: শিক্ষা পরিবর্তন, আর্থিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভেদাভেদ দূর করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “পৃথিবীতে পরিবর্তন আনার জন্য শিক্ষাই হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র'। এনআইটি-আগরতলায় প্রধানমন্ত্রীর কথারই প্রতিফলন দেখা যায়। শনিবার এনআইটি আগরতলার অটল বিহারী বাজপেয়ী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ১৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু শিক্ষা প্রদান নয়, দেশের ভাগ্য নির্ধারণে অংশগ্রহণ করা। রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে শিক্ষামূলক হাব রূপে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য সমাজে পিছিয়ে পড়াদের জন্য স্কলারশিপ চালু করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় আধুনিক পরিকাঠামো তৈরির বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি ২০২০-কে এই নীতির মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবে শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের সংস্কৃতিকে না ভুলেও বিশ্ব দরবারে প্রতিযোগিতার উপযোগী হয়ে উঠতে সক্ষম হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার এনআইটি আগরতলার অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সেজন্য রাজ্য সরকার পরিকাঠামো তৈরি, সহযোগিতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ, রাজ্যের টেকনিক্যাল কলেজগুলির সাথে একসাথে কাজ করা ইত্যাদি উদ্যোগ নিতে উৎসাহী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘স্কিল ইন্ডিয়া' এবং অটল ইনোভেশন মিশনেও বর্তমান যুগের উদ্ভাবনীমূলক মেধাতে জোর দেওয়া হয়েছে। জাতীয় স্তরীয় এসব উদ্যোগে উদ্বুদ্ধ হয়ে এনআইটি আগরতলাকেও আমরা রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রের যোগানের হাব রূপে দেখতে পারি। তিনি তাই ‘স্কিল ইন্ডিয়া” এবং অটল ইনোভেশন মিশন এর নীতিগুলিকে এনআইটি আগরতলায় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করায় উৎসাহ দেন।
এনআইটি আগরতলায় সদ্য উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তোমাদের সাফল্য হচ্ছে আমাদের সকলের গর্ব এবং তোমাদের সাফল্যের কাহিনী অন্য ছাত্রছাত্রীদেরও অনুপ্রেরণা দেবে। তিনি বলেন, পৃথিবীতে আবহাওয়ার পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পরিবর্তন, প্রযুক্তিতে রাজনৈতিক ও নীতিবাদ দ্বিধা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের সমস্যা রয়েছে। তিনি ছাত্রছাত্রীদের এসব সমস্যা ঐক্যবদ্ধভাবে সাহস, ধৈর্য্য, শিক্ষা ও নীতিবাদ মূল্যবোধের সাথে মোকাবিলা করার পরামর্শ দেন। ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত' ভাবনাকে গ্রহণ করে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার হতে উৎসাহ দেন।
অনুষ্ঠানে এনআইটি আগরতলার বোর্ড অব গভর্নর্স-এর চেয়ারম্যান বিনোদ বাউরি বলেন, এনআইটি শিক্ষার্থীদের জন্য আজ একটি বিশেষ দিন। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা যে শিক্ষালাভ করেছে তা জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারবে। দেশ ও সমাজের জন্য কিছু করার প্রচেষ্টা বা চিন্তা ভাবনা নিয়ে তাদের এগুতে হবে। অনুষ্ঠানে এনআইটি আগরতলার ডিরেক্টর প্রফেসর শরত কুমার পাত্র বলেন, এনআইটি আগরতলা একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইনস্টিটিউট। বর্তমানে এনআইটি আগরতলায় ৪৮৫০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করছে। এই প্রতিষ্ঠানটিতে বিটেক স্তরে ৯টি শাখা, এমটেক স্তরে ২৪টি স্পেশালাইজেশন এবং ডুয়েল ডিগ্রী কোর্সে ৫টি শাখা রয়েছে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটিতে এমবিএ, এসসিএ, এমএসসি এবং পিএইচডি প্রোগ্রামগুলি রয়েছে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৪৫ জনকে পিএইচডি, ১১৭ জনকে এমটেক, ১২ জনকে এমসিএ, ৩১ জনকে এমবিএ, ১৯ জনকে এমএসসি, ৭৭৩ জনকে বি-টেক, ৫২ জনকে বিএস, ১৪ জনকে বিটি, ৩৭ জনকে বিএসএমএস এবং ৭ জন বিটিএমটি গ্র্যাজুয়েটদের শংসাপত্র (ডিগ্রী) প্রদান করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তন অধিকর্তা অধ্যাপক দামোদর আচার্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ