এনআইএ মানব পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে যখন সারা দেশ জুড়ে ব্যাপক হারে ধরপাকড় অভিযান চালাচ্ছে। এরমধ্যেও সক্রিয় রয়েছে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্র, ত্রিপুরায় তার আরো এক ঘটনা প্রকাশ্যে এলো।
মোহনপুর মোহকুমার সিধাই থানাধীন মোহনপুর এলাকা দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশের সময় দুই বাংলাদেশীকে আটক করে বিএসএফ জওয়ান। পরবর্তী সময় বিএসএফ তাদের সিধাই থানায় হস্তান্তর করে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন সিধাই থানার সাব ইন্সপেক্টর এ টি আলম। তাদের কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। বেশ কিছু বাংলাদেশি নোট এবং মোবাইল ফোন আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদেরকে আদালতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আরো বলেন, তাদের একজনের নাম আনসারী আলী এবং অন্যজনের নাম আয়েশা আক্তার( তৃতীয় লিঙ্গ)। তাদের বাড়ি বাংলাদেশ বগুড়ায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে জানিয়েছে।
আয়েশা আক্তার বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য তোলে ধরেছে, সে জানায় পাচারকারীরা ফেসবুকে গ্রুপ বানিয়ে বিভিন্ন পুরুষ ও মহিলাকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঠানোর জন্য নানা টোপ দিচ্ছে।
তারাও ফেসবুকের মাধ্যমে এক দালালের সঙ্গে কথা বলে এদেশে তারা পাড়ি দেয় রোজগারের আশায়, তাকে বলা হয়েছিল ভারতে এলে অনেক বেশী রোজগার করতে পাবে। বাংলাদেশে দালালরা আয়েশার কাছ থেকে ১৪ হাজার এবং আনসারী আলীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেয় ওপারের দালালরা। আয়েশা আরো জানায় তার কাছে আধার কার্ড নেই তাই সে আসতে চাইছিলো না। তখন দালালরা তাদেরকে মারধর করে ও মই দিয়ে কাঁটাতারের উপর দিয়ে এপারে ফেলে দেয়।
এই দুই বাংলাদেশী আটক আন্তর্জাতিক পাচার চক্র সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য তুলে দিচ্ছে। পাচারকারীরা শুধু মানুষ পাচার করে ক্ষান্ত নয়। একটি চক্র বাংলাদেশী নাগরিকদেরকেও জাল আধার কার্ড তৈরি করে দিচ্ছে। এইসব জাল আধার কার্ড দেখিয়ে বাংলাদেশী মানুষ পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের চোখে ধুলা দিয়ে অনায়াসে ভারতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বাংলাদেশে নাগরিকের আধার কার্ড হয় না, তারা পাসপোর্ট এবং ভিসা নিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। কিন্তু নাগরিক আয়েশা বলছে তার কাছে আধার কার্ড না থাকায় সে আসতে চাইছিল না।
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তল্লাশি চালালে আরো বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসবে বলে ধারণা সচেতন মহলের।
0 মন্তব্যসমূহ