আগরতলা, ১০ নভেম্বর: প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি হলেও আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতি এখনও জনপ্রিয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবসের রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী টিংকু রায় একথা বলেন। এবারের জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবসের মূল ভাবনা হলো 'প্রতিদিন সবার জন্য আয়ুর্বেদ'। অর্থাৎ পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের অন্তর্গত মানুষ, গৃহপালিত ও বন্যপ্রাণী সকলের সুস্বাস্থ্য আয়ুর্বেদের মাধ্যমে সুনিশ্চিত করা। তাছাড়াও এবার জনসাধারণকে আয়ুর্বেদ সম্পর্কে সংবেদনশীল করার জন্য এই দিবসে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারা দেশে একমাসব্যাপী এই দিবস উদযাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণমন্ত্রী শ্রীরায় আরও বলেন, আয়ুর্বেদ চিকিৎসাকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে। আয়ুর্বেদের মাধ্যমে মানুষ, গৃহপালিত প্রাণী ও বন্যপ্রাণী সকলের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায়। তাছাড়াও কৃষি ও প্রাণীপালনেও আয়ুর্বেদ ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি বলেন, জনসাধারণ যত বেশি আয়ুর্বেদ চিকিৎসা গ্রহণ করবেন তত বেশি উপকৃত হবেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর আয়ুর্বেদ চিকিৎসাকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াস নেন। এজন্য আয়ুষ মিশন গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত এখন আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্বয়ম্ভর হয়ে উঠছে। আমাদের রাজ্যেও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা সম্প্রসারণ ও পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসার প্রচার ও প্রসারে রাজ্য সরকার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। প্রায় সমস্ত ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধ রোগীদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নব ভারত, আত্মনির্ভরশীল ভারত ও স্বপ্নের ভারত গড়ার যে ডাক দিয়েছেন তার বাস্তবরূপ দিতে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডা. সন্দীপ আর রাঠোর বলেন, আজ অষ্টম জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজ্যে এই দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। তিনি বলেন, কৈলাসহর ও গোমতী জেলার চন্দ্রপুরে ইন্টিগ্রেটেড আয়ুষ হাসপাতাল চালু রয়েছে। সারুমেও আরেকটি ইন্টিগ্রেটেড আয়ুষ হাসপাতাল চালু করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা দিলীপ কুমার চাকমা। তাছাড়া বক্তব্য রাখেন স্টেট আয়ুর্বেদ হাসপাতালের হেড অব অফিস ডা. সুনন্দ ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, মেডিক্যাল এডুকেশনের অধিকর্তা ডা. এইচ পি শৰ্মা সহ বহু চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রী। অনুষ্ঠান শুরুর আগে সমাজকল্যাণমন্ত্রী সহ অতিথিগণ প্রভু ধনুস্তরীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার বিষয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডা. কিশোর দেববর্মা, ডা. বিজয় চৌধুরী, ডা. শৈবাল চন্দ্র পন্ডিত, ডা. অভিজিৎ সাহা ও ডা. মণিলাল দাসকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়। স্টেট আয়ুর্বেদিক হাসপাতালকে অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন হেলথ কেয়ার সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডে সान জানানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৬ জন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসককে সম্মান জানানো হয়। সমাজকল্যাণমন্ত্রী সহ অতিধিগণ তাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মল্লিক। রাজ্য আয়ুষ মিশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
0 মন্তব্যসমূহ