আগরতলা, ২৮ নভেম্বর: প্রত্যেক ছেলেমেয়ের মধ্যেই শিল্পকলার সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে। এই সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের অন্যতম মঞ্চ হচ্ছে কলা উৎসব। যা ২০১৫ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী সূচনা করেন। তখন থেকে প্রতিবছর জেলা, রাজ্য এবং জাতীয়স্তরে এই উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। মঙ্গলবার আগরতলা টাউনহলে দুইদিন ব্যাপী রাজ্য ভিত্তিক কলা উৎসবের সমাপ্তি দিনে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আরও বলেন, শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে শিল্প সংস্কৃতির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশে উৎসাহ দান, তাদের প্রতিভার যত্ন ও বৃহত্তর ক্ষেত্রে তাদের মেধা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করাই কলা উৎসবের মূল লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলাস্তর থেকে জাতীয়স্তরে এই উৎসব আয়োজন করার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর মধ্যে দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরা। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং বেসরকারি স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ মানের শিক্ষার্থীরা এই উৎসবে অংশ গ্রহণ করতে পারে। শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত, চিরাচিরত লোকসংগীত, বাদ্য, গীতিনির্ভর যন্ত্রসংগীত, শাস্ত্রীয় ও লোকনৃত্য, দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক চিত্রকলা, চিরাচরিত স্থানীয় শৈলীর পুতুল তৈরী এবং একক নাট্যাভিনয় এই দশটি বিভাগে শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারে। এবারের উৎসবে রাজ্যের ১৬০ জন ছাত্রছাত্রী অংশ গ্রহণ করেছে। প্রত্যেকেই জেলাস্তরে প্রথম হয়ে রাজ্যস্তরে অংশ নিয়েছে। রাজ্যস্তরে যারা প্রথম হবে তারা আগামী বছর ৯ থেকে ১২ জানুয়ারি দিল্লীতে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর জাতীয়স্তরে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত গৌরবজনক ফলাফল করেছে। কেবল অংশগ্রহণ নয়, নিজেদের কৃতিত্বে তারা রাজ্যের জন্য পুরস্কার এনে আমাদেরকেও গর্বিত করেছে। জাতীয় প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ স্থানাধিকারী রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর জনপ্রিয় কর্মসূচি 'পরীক্ষা পে চর্চায়' অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান। তারা সেখানে উপস্থিত থেকে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে রাজ্যের সুনাম বৃদ্ধি করছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির অঙ্গ হিসাবেই এবার কলা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে ছাত্রছাত্রীদের অঙ্কন, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ইত্যাদির উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার পাশাপাশি শিল্পকলার বিষয়ে আরও আকৃষ্ট করার লক্ষ্যেই কলা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এই উৎসবে ছাত্রছাত্রীরা জেলা ও রাজ্যস্তরে ১০টি বিভিন্ন বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। রাজ্যস্তরে প্রতিটি বিভাগে যারা প্রথম হয়েছে তারা জাতীয়স্তরে অংশগ্রহন করবে। জাতীয়স্তরে কলা উৎসবে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা গত তিন বছর ধরে পুরস্কার লাভ করে রাজ্যের সুনাম বৃদ্ধি করছে।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা এবং বুনিয়াদী শিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা শুভাশিষ বন্দোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান মঞ্চে এবছর রাজ্যস্তরীয় প্রতিযোগীতায় যারা প্রথম হয়েছে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার প্রাপকদের হাতে পুরস্কারস্বরূপ ট্রফি ও শংসাপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ। গত বছর জাতীয়স্তরের কলা উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রী রিয়া গাঙ্গুলী অনুষ্ঠান মঞ্চে বেহালা বাদন পরিবেশন করেন।
0 মন্তব্যসমূহ