Advertisement

Responsive Advertisement

ত্রিপুরার বিশিষ্ট কবি সুমিতা বর্ধন'র দুইটি কবিতা

                    
                    ধর্ষিত ভালবাসা
   
যে শহরে ভালবাসারা প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হয়
সেটা আমার শহর
সেটা আমার গ্রাম
সেটা আমার ঘর।
যেখানে রাতবিরেত লাগে না,
সকাল সন্ধ্যা লাগে না।
প্রতিনিয়ত ভালবাসাদের দমবন্ধ করে
মারতে দেখেছি,মরতে দেখেছি।
দেখেছি মুখ আর মুখোশের খেলা
স্বার্থপরতার কড়াল গ্রাসে
বিধ্যস্থ হতে দেখেছি
কতো তোমাকে,কতো আমাকে।
এই শহরে ভালবাসারা ঘুমায় বেশি,জাগে কম
এই সমাজ দেখেছে ভালবাসার নপুংসক রূপ,
এই ঘর প্রতিনিয়ত দেখেছে
ভালবাসার নগ্ন রূপ আর অশ্রুশিক্ত নয়ন।
যে শহরে ভালবাসারা
প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হয়।
সেটা আমার শহর
সেটা আমার গ্রাম
সেটা আমার ঘর।



                          ভাবনা

সুন্দরী মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে
লাশ কাটা ঘরের মখমলি বিছানায়,
হারু ডোম সেই মুহূর্তে
কামনার আগুনে পুরছিল
চোখ দিয়ে লাল ঝড়ছিলো,
কোমরে গুঁজে রাখা ছোট্ট বোতল
মাতালকে আরো মাতাল বানিয়ে ছাড়বে আজ,
আস্তে আস্তে সে আসে তার বাসর ঘরের বিছানায়,
বড় মায়া মুখখানায়,
এক্কেবারে নিটোল স্তন যুগল
মনে হয় অপেক্ষা করছিলো
একমাত্র তাঁরই জন্য।
একটানে ছিঁড়ে ফেলে
সুন্দরীর লজ্জা ঢাকার ব্যর্থ প্রচেষ্টাকে।
হারু ডোম অন্ধকারে 
কিন্তু, মোবাইলের আলোয় ঝলসে উঠে লাশকাটা ঘরে
শুয়ে থাকা সুন্দরীর নিটোল দেহটা,
আজ এই মুহূর্তে বড় ভালবেসে ফেলেছে-
লাশকাটা ঘরের এই মেয়েটিকে 
জড়িয়ে ধরে মেয়েটিকে 
ভীষন ভালবেসে আদরে আদরে ভরিয়ে তোলে সুন্দরীর নগ্ন দেহটিকে,
যতক্ষন না হারু ডোমের কামনার আগুন শান্ত হয়ে এলো।
ভোর হয়ে এলো 
পাড়ার মাইকে বাজছে
বীরেন্দ্র কৃষ্ণের গলায় মহিষাসুর মর্দিনী,
লাশকাটা ঘরের সুন্দরী মেয়েটির মতো-
আরো একটি সুন্দরী মেয়ে সেজে উঠছে ধীরে ধীরে-
হারু ডোমের মতো এক পুরুষের হাতেই।
সেই পুরুষটি ভীষন ভালোবেসেই
সাজিয়ে তুলছে লাশকাটা ঘরের মেয়েটির মতো আরেকটি মেয়েকে,
দুটো মেয়েই নিশ্চুপ বা কাঠের পুতুলের মতো নির্বাক,
শুধু ভাবনায় বিস্তর ফারাক
ভালোবাসার দুটো মানুষের মধ্যে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ