আগরতলা, ৪ নভেম্বর: আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের শুক্রবার বাংলাদেশের “জাতীয় সংবিধান দিবস” পালন করা হয়। এই উপলক্ষে মূলত এক আলোচনা-চক্রের আয়োজন করা হয়।
অফিস প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই কর্মসূচি শুরুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর লিখিত বাণী পাঠ করা হয়। দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী এবং যথাক্রমে প্রথম সচিব মোঃ আল আমীন, আগরতলার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ড. মোস্তফা কামাল সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এই মিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ। বক্তারা “জাতীয় সংবিধান দিবস - ২০২৩” পালন করা এবং এ বছরের প্রতিপাদ্য - “বঙ্গবন্ধুর ভাবনা, সংবিধানের বর্ণনা”-কে স্বাগত জানান। বাংলাদেশের সংবিধান পৃথিবীর সুলিখিত সংবিধানগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে উল্লেখ করেন। বক্তাগণ আরো উল্লেখ করেন, সংবিধান একটি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের কার্যপরিধিসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়ামক দলিল। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবিধানকে সমুন্নত রাখার বিষয়ে অতিথিগণ গুরুত্বারোপ করেন।
সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ তার সমাপনী বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহীদকে। তিনি আরোও স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ সম্ভ্রমহারা মা-বোন সহ মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বীর শহীদদেরকে। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আশা-আকাঙ্খার একটি অনন্য রাজনৈতিক দলিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে বল্লমের অজস্র খোঁচায়। চেষ্টা করা হয়েছে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূল চরিত্র পাল্টে দিয়ে পাকিস্তানি ভাবধারায় সাম্প্রদায়িক একটি রাষ্ট্রে পরিণত করার। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত বিচার বিভাগসহ সর্বস্তরের বাঙালি বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সবসময় সচেষ্ট থেকেছে এবং আছে সংবিধানের মূল চরিত্র ও কাঠামোকে রক্ষা করতে। তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন “ভবিষ্যৎ বংশধররা যদি জাতির পিতার ভাবনায় রচিত সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তাহলে আমার জীবন সার্থক হবে, শহীদের রক্তদান সার্থক হবে”।
“জাতীয় সংবিধান দিবস” উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় ত্রিপুরার সিভিল সোসাইটির ব্যক্তিবর্গ এবং আগরতলা মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান জনাব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী।
0 মন্তব্যসমূহ