আগরতলা, ৩০ নভেম্বর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্যই হচ্ছে সমাজের অন্তিম ব্যক্তির উন্নয়ন। প্রশাসনিক সমস্ত সুযোগ সুবিধা সকল অংশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর অন্যতম অভীষ্ট লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে চলছে রাজ্য সরকার। বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রায় কেন্দ্রীয় প্রকল্প ও রাজ্য সরকারের প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত এবং এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার সংকল্প নেওয়া হয়েছে। এজন্য সকলকে হাতে হাত ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার পশ্চিম জেলার মান্দাই ও আগরতলার এমবিবি চৌমুহনী এলাকায় বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার পৃথক দুটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এদিন প্রথমে মান্দাই ব্লকের অধীন লক্ষ্মীপুর শিববাড়ি প্রাঙ্গনে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও ত্রিপুরা সরকারের প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান কর্মসূচিতে যোগদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা নিয়ে দেশজুড়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাখা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেন মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রশাসনিক আধিকারিকগণ। এই অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, জিরানিয়া মহকুমা শাসক শান্তি রঞ্জন চাকমা সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন স্বসহায়ক দলের সদস্যদের হাতে ব্যাঙ্ক ঋণের চেক তুলে দেন।
পরে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আগরতলার এমবিবি চৌমুহনী এলাকায় বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ভ্যানের ফ্ল্যাগ অফ করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার মূল লক্ষ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের সুবিধাভোগী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধাগুলি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। এই দিশা নিয়েই কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী আবাসন বোর্ড থেকে শুরু করে খাদ্য নিরাপত্তা, সঠিক পুষ্টি, নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা, নল সে জলে বিশুদ্ধ পানীয় জল, গুণগত শিক্ষা, মৌলিক সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে সমস্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত ১৫ নভেম্বর জনজাতি গৌরব দিবসের দিনে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানের সূচনা হয়েছে। এর অন্যতম উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রশাসনের সমস্ত সুযোগ সুবিধা সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের জনমুখী বিভিন্ন প্রকল্প যাতে ১০০ শতাংশ বাস্তবায়ন করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার যে কাজ করছে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা সেই লক্ষ্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার ভ্যান রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমার প্রত্যন্ত এলাকা, ভিলেজ কমিটি সহ শহর এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। রাজ্যের সমস্ত গ্রাম, এডিসি এলাকা সহ সব জায়গায় এই কর্মসূচি পৌঁছে দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি এই ভ্যানগুলিতে এলইডি স্ক্রিনে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির প্রচার করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে রাজ্যে ৩টি প্রচার ভ্যান এসে পৌঁছেছে। আগামীকাল আরো একটি এসে পৌঁছবে। মোট ১৬টি প্রচার ভ্যান রাজ্যে আসার কথা রয়েছে।
এদিন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, কর্পোরেটর রত্না দত্ত, পুর নিগমের কমিশনার শৈলেশ কুমার যাদব সহ অন্যান্য অতিথিগণ। পরে সবুজ পতাকা নেড়ে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ভ্যানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
0 মন্তব্যসমূহ