Advertisement

Responsive Advertisement

সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুফল সুনিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : মুখ্যমন্ত্রী



আগরতলা, ১৫ নভেম্বর: জনজাতিদের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সাল থেকে ১৫ নভেম্বর দিনটিকে জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসাবে পালনের ঘোষণা করেন। এই দিনটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে জনজাতিদের বীর নেতৃত্ব ‘ভগবান হিসেবে পরিচিত বিরসা মুন্ডার জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। এই দিনটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামে জনজাতিদের ভূমিকাকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার আর্থ সামাজিক মান উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে জনজাতি গৌরব দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা একথা বলেন। জনজাতি গৌরব দিবস উদযাপনের পাশাপাশি রাজ্যে আজ বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ অভিযানেরও আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ ঝাড়খন্ড থেকে সরকারি প্রকল্প সমূহের তথ্য সমৃদ্ধ ভ্রাম্যমান প্রচার বাহনের যাত্রার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' কর্মসূচির সূচনা করেন। এই সংকল্প যাত্রা আগামী ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ পর্যন্ত দেশের জনজাতি অধ্যুষিত বিভিন্ন জেলা পরিক্রমা করবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন ও জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব এল টি ডালং। অনুষ্ঠানে জনজাতি সম্প্রদায়ের পাঁচজন বরিষ্ঠ প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহাকে ঐতিহ্যবাহী রিসা পড়িয়ে সম্মাননা জ্ঞাপন করেন।
রবীন্দ্র ভবনে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং জনজাতি কল্যাণ দপ্তর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প ও পরিষেবা সমূহের সুবিধা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যোগ্য সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দিতে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২০ অভিযানের সূচনা করা হয়েছে। যোগ্য সুবিধাভোগীদের কাছে সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুফল সুনিশ্চিত করতে বর্তমান রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীর 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সরকা প্রয়াস এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজা ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণে সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলির মাধ্যমে স্যানিটেশন সুবিধা, আবশ্যক আর্থিক পরিষেবা, এলপিজি সংযোগ, দরিদ্র অংশের জনগণের জন্য আবাসন, খাদ্য নিরাপত্তা, সঠিক পুষ্টি, নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিশুদ্ধ পানীয়জল, গুণগত শিক্ষা ইত্যাদি মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার মিশন মুডে নিরন্তর কাজ করে চলেছে।
সমাজের অস্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি প্রাপ্য সুবিধা এবং বিভিন্ন সুযোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা সুনিশ্চিত করতে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবার সুফল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যেই 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' কর্মসূচির মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী এই অভিযান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই অভিযান কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল, যোগ্য অথচ এখনও পর্যন্ত যারা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের আওতায় সুবিধা লাভ করতে পারেননি, তাদের চিহ্নিত করে সেই প্রকল্পগুলোর সুবিধা পৌঁছানো। পাশাপাশি প্রকল্পগুলির মাধ্যমে উপকৃত সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভাব বিনিময় ও যোগ্য সুবিধাভোগীদের বিস্তৃত বিবরণ সংগ্রহের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত করাও এই অভিযানের উদ্দেশ্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যেও আজ থেকে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুরু হচ্ছে। একই সাথে আজ থেকে প্রতিঘরে সু-শাসনের দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযান শুরু হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের কাছে সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আজ জনজাতীয় গৌরব দিবস, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা এবং প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০-র অভিযান এই তিনটি কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে। আজ থেকে আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ৩ দিনব্যাপী জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি যেমন, স্বসহায়ক দলের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী, আলোচনাচক্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি আজ থেকেই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২০ অভিযান একই সঙ্গে চলবে। তথ্য দপ্তরের সচিব বলেন, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো যারা এখনও কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করেননি তাদের চিহ্নিত করে সুবিধা প্রদান করা। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত পোস্টার নিয়ে বেশ কয়েকটি ভ্যানগাড়ি রাজব্যাপী ঘুরে বেড়াবে। রাজ্যের প্রতিটি জেলার গ্রামীণ এলাকা, পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটি, রক এবং পুর, শহর কিংবা নগর এলাকার ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত হবে এই কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প ও পরিষেবা প্রদান সহ উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে বিকাশ সভা, শিবির ও জেলাস্তরীয় মেলার আয়োজন করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ