আগরতলা, ১৩ ডিসেম্বর: রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল প্রাণীপালকদের প্রাণীপালনে উৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ও প্রাণীপালকদের স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীসম্পদ বিকাশ যোজনার অধীনে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মাননিধি প্রকল্প নামে একটি নতুন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের এককালীন ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মাননিধি প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রাণীসম্পদ বিকাশমন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন। উল্লেখ্য, যেসকল প্রাণীপালকদের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার কম এবং অন্তত একটি দুগ্ধবতী গাভী অথবা ১০টি ছাগল বা একটি উন্নত জাতের শূকর রয়েছে তাদের এই প্রকল্পে এককালীন ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে রাজ্যে ২,৯০০ জন চিহ্নিত প্রাণীপালককে সহায়তা দেওয়া হবে। এরজন্য মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা।
অনুষ্ঠানে প্রাণীসম্পদ বিকাশমন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি সততা, স্বচ্ছতা ও সময়ের মধ্যে বাস্তবায়িত করার বিষয়ে রাজ্য সরকার প্রথম থেকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যবাসীর মধ্যে স্বউদ্যোগের মানসিকতা সৃষ্টিতে সরকার বরাবর সচেষ্ট রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সফলতা পেতে গেলে উদ্যোগীদের অবশ্যই দৃঢ় সংকল্পবোধ ও কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা থাকতে হবে। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীসম্পদ বিকাশ যোজনায় রাজ্যে ডিম ও মাংসের চাহিদার ঘাটতি মেটানোর উদ্দেশ্যে ৩৬ হাজারেরও বেশি পরিবারকে পোল্ট্রি মোরগ ও হাঁস পালনের জন্য ১,৩০০ টাকা করে সহায়তা করা হবে। কাফ গ্রোথ মিল স্কিমে সেক্স সর্টেড সিমেনে জন্ম নেওয়া উন্নত প্রজাতির বাছুরদের ৩-১২ মাস বয়স পর্যন্ত পুষ্টি ও খাদ্যের জন্য ভর্তুকিতে খাদ্য প্রদান করা হবে। এছাড়া কমপেনসেশন ফর লস অব লাইভস্টক অ্যান্ড বার্ডস টু দ্য ফিনান্সিয়ালি উইকার্স সেকশন স্কিমে দরিদ্র পরিবারের গৃহপালিত পশু বা পাখির অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করা হবে। এছাড়াও মিনি হ্যাচারি স্কিম, ন্যাশনাল লাইভস্টক মিশন সহ অন্যান্য বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাণীপালকদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এগ্নি এলাইড সেক্টরগুলি থেকে দেশের জিডিপিতে ১৯-২০ শতাংশ যোগদান রয়েছে। তাই কৃষি, প্রাণীপালন ও মৎস্য চাষের সার্বিক
বিকাশের মাধ্যমে আমাদের রাজ্যকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিশায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহার সুদক্ষ পরিচালনায় রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। ২০১৮ সালের পর থেকে জনকল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য, প্রধান সচিব বি এস মিশ্র এবং প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা ড. নীরজ কুমার চঞ্চল। অনুষ্ঠানে অতিথিগণ বিভিন্ন সুবিধাভোগীর হাতে টাকার চেক ও বিভিন্ন সামগ্রী তুলে দেন।
1/1
0 মন্তব্যসমূহ