আগরতলা, ১ ডিসেম্বর: তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে রাজ্যের মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেনমন্ত্রী রতন লাল নাথ, বলে অভিযোগ ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের। শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী এক প্রেস রিলিজ জারি করে এই অভিযোগ করেছেন। তিনি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। কংগ্রেসের প্রেস রিলিজে লেখা রয়েছে, মিথ্যা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে রতনের মানুষকে বোকা বানানোর প্রচেষ্টা- নিন্দা কংগ্রেসের।
তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে এবং মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে মন্ত্রী রতন লাল নাথের মানুষকে বোকা বানানোর জন্যে প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস। দলের রাজ্য সভাপতি আশিস সাহা তার দেওয়া বিবৃতিতে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস আশা করেছিল এক পিতার সন্তান বিক্রির ঘটনা সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর একজন বরিষ্ঠ মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিসাবে রতনবাবু হয়তো তার দেওয়া রেগার মিথ্যা তথ্য এবং সন্তান বিক্রির ঘটনার অধীকারের বিবৃতি ক্ষমা চেয়ে প্রত্যাহার করে নেবেন। কিন্তু তা না করে তিনি আবারো প্রেস মিট করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করলেন। চতুরতার আশ্রয় নিয়ে তিনি অর্থহীন কিছু তথ্য দিয়ে নিজের সাফাই গাইতে চেষ্টা করলেন অথচ মুল সমস্যা নিয়ে কিছুই বললেন না। কিসের পাল্টা জবাব হলো এটা? এখন অব্দি রেগার কর্মদিবস গড়ে 37 দিন এবং তা সরকারি পোর্টালে দেওয়া তথ্য। তাই সে বিষয়ে আলোচনার পথে হাঁটলেন না তিনি, শুধু মুন্সিয়াকামি ব্লক এর তথ্য তুলে ধরলেন রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে। তিনি কি শুধু মুঙ্গিয়াকামি ব্লক এর গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী নাকি সারা রাজ্যের মন্ত্রী তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন সভাপতি আশিস সাহা। রেগার শ্রমদিবস নিয়ে বললেন অথচ রেখার মজুরি দেওয়া হচ্ছে না গত 7 মাস ধরে এই বিষয়ের দিকে গেলেনই না। এসব তথ্যের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে রাজনীতি পুরোনো হয়ে গেছে, আজকাল হাতে হাতে মোবাইল আর তথ্য নিয়ে বেড়ায় যুব সম্প্রদায় বলে সভাপতি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন বলেন সাংবাদিক সম্মেলনে তার মিথ্যা তথ্য পেশ করা এবং পরবর্তী সময়ে তার এই মিথ্যা হাতেনাতে ধরা পরার পরও একজন সিনিয়ার মন্ত্রী হিসাবে তিনি তার মন্তব্য প্রত্যাহার করলেন না যা খুবই লজ্জাজনক এবং রহস্যজনকও। সভাপতি আরও বলেন যে, ডবল ইঞ্জিনের কথা বলে, রাজ্যে কলসিতে কলসিতে টাকা আনা ও মানুষকে কাজ, রোজগারের জুমলা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে বিজেপি। এখন সেগুলি কিছুই না দিতে পেরে শাসকদল মিথ্যা তথ্যের জাল বুনে মানুষকে বোকা বানানোর ফন্দি এটেছে যা রাজ্যের নাগরিকদের সাথে একটি অভূতপূর্ব প্রতারনা। তিনি বলেন মিথ্যাবাদী রতনবাবু তথ্য দিয়েছেন যে, ২০১৮-২০১৯ আর্থিক বছরে রেগা প্রকল্পে ৮৭৯ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা এসেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের আর ডি দফতরের পোর্টালের তথ্য বলছে ওই আর্থিক বছরে ৪৪২.৫৪ কোটি টাকা রেখা প্রকল্পে এসেছে। পাশাপাশি ২০১৯-২০২০ আর্থিক বছরে তার দাবী মতো ৮১৪ কোটি ৩ লক্ষ টাকা এসেছে। বাস্তবে এই অর্থের পরিমান ৭৪০.০৪ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় শ্রমদিবস সৃষ্টির ক্ষেত্রেও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন এই প্রবীন জুমলাবাজ মন্ত্রী। ২০১৮- ২০১৯ আর্থিক বছরে মাত্র ৩৪টি শ্রমদিবস তৈরি করতে পেরেছে রাজ্য সরকার। সেখানে তিনি তথ্য দিয়েছেন সংখ্যাটা নাকি ৫১, ২০১৯-২০২০ সালে ৬১, ২০২০-২০২১ সালে ৭৫, ২০২১-২০২২ সালে ৭১, ২০২২-২০২৩ সালে ৬০টি শ্রমদিবস তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের আর ডি দফতরের পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ সালে ৪, ২০২০-২০২১ সালে ৫৩, ২০২১-২০২২ সালে ৫৩ এবং ২০১২-২০২৩ সালে ৪২টি শ্রমদিবস তৈরি করেছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে রেগা প্রকল্পে ৭৮৮.৫৫ কোটি টাকা এসেছে। এছাড়া ৩৭টি অনদিবস সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে তিনি তথ্য দিয়েছেন চলতি বছরে নাকি রেগা প্রকল্পে ৮৪৯ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা এসেছে। পাশাপাশি চলতি বছরে ৫১টি শ্রমদিবস সৃষ্টির দাবী করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ব্যক্তিত্ব হয়েও অবলীলায় মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে চলেছেন। রাজ্য সরকারের ডি. আর. ডি. এ দফতরের তথ্য অনুসারে ২০১৭-২০১৮ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরায় এসএইচজি'র সখ্যা ছিলো 39082 কিন্তু রতনলালের মতে তা মাত্র 19000। বিবৃতিতে | বিজ্ঞাপনি প্রচার দিয়ে বিজেপি ত্রিপুরার মানুষকে অনেক বোকা বানিয়েছে যেটা রাজ্যের মানুষ টের পেয়ে গেছে। তাই এই রাজ্যের মানুষকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও বিজ্ঞাপনি চমক দিয়ে আর বোকা বানাতে পারবে না বিজেপি বলে মন্তব্য করেন তার বিবৃতিতে।
0 মন্তব্যসমূহ