অয়ান নাগ, ধর্মনগর, ২৭ ডিসেম্বর : রাজ্য জুড়ে কিছু কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলির পরিষেবা নিয়ে যে বদনাম রয়েছে, ধর্মনগরের তার ব্যতিক্রম নয়। এবার সঠিক পরিষেবা না দিতে পেরে রোগীর এবং রোগের আত্মীয়-স্বজনের ক্ষোভের মুখে ধর্মনগরের টেরেসা ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
বাসনা দত্ত রায় (৫৬)। ৩ বছর যাবত ক্যান্সার রোগী, আগরতলার ডাক্তার বিশ্বজিত দেববর্মা অধীনে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাসনা দত্ত রায় টেরেসা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এন্ডোস্কোপি করতে আসেন। এন্ডোস্কোপি করার সময় বায়স্পি করার জন্য স্যাম্পল নেওয়া হয়। ঠিক তারপর বের করে আনার পরে রোগী অবস্থা বেগতিক হয়ে দাঁড়ায়। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ছুটে যায় বাসনা দত্ত রায়কে দেখতে।
সেখানে বাসনা দত্তর রায়ের পরিজনেরা জানায় যেহেতু তাদের মা তিন বছর যাবত খাদ্যরনালীর ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত তাহলে চিকিৎসক বিশ্বজিৎ দেববর্মার নির্দেশ অনুযায়ী শুধুমাত্র এন্ডোসকপি করার কথা, কেন বায়োস্পির জন্য স্যাম্পল নেওয়া হল? মেয়েরা তাদের মাকে এন্ডোসকপি করানোর জন্য এনেছিল কেন তাদেরকে না বলে বায়োস্পির স্যাম্পল নেওয়া হল এবং টাকা কাটা হল। তারমধ্যে আবার টেরেসা ডাইগনস্টিক সেন্টার এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীরা তাদের প্রতি খুব বাজে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ জানান। এমনকি দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা অমিতাভ রায় নাকি বলেছেন রোগীর এন্ডোসকপি হয়ে গেছে এখন রোগীর কোন কিছু হলে তাদের কোন দায়িত্ব নেই কারণ তারা বন্ডসই করে রোগীকে ভেতরে পাঠিয়ে ছিলেন। এমন অবস্থায় একটা ধুন্দুমার কান্ড শুরু হয়ে যায় এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর মধ্যে। রোগীর প্রয়োজন এরা দাবি করে কেন তাদেরকে না বলে বাইসপির জন্য স্যাম্পল নেওয়া হল। তাদের মা সুস্থ অবস্থায় এসেছিল এখন এই রোগের বেহাল অবস্থা। এমনকি ন্যূনতম একটা স্যালাইন লাগিয়ে রোগীকে আপাতত সুস্থ করার মতো মনোবৃত্তি পর্যন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারীদের নেই। তাদের মাকে বেহাল অবস্থা বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে এই সেন্টারের পদ্ধতি। অর্থাৎ বায়োস্পির কথা উল্লেখ করা না থাকলেও জোর করে টেরেসা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মচারীরা অতিরিক্ত টাকা রোজগারের জন্য রোগীর অবস্থা বিবেচনা না করে রোগীর খাদ্যনালী থেকে বায়োসপীর স্যাম্পল সংগ্রহ করতে গিয়ে রোগীকে আরো বেহাল অবস্থায় পরিণত করেছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা অমিতাভ রায়'র সাথে কথা বললে বোঝা যায় সম্পূর্ণ ব্যাপারটি বোঝাপড়ার মধ্যে গন্ডগোল হওয়ায় এই পরিণতি। কারণ এই সেন্টারে যা যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে তার সঠিক পরিকাঠামো এখনো শুরু হয়নি তবে আস্তে আস্তে যে পরিকাঠামোর দরকার তা করার উদ্যোগ রয়েছে সেন্টার কর্তৃপক্ষের। এদিকে বাসনা দত্ত রায়ের দুই মেয়ে জানায় তারা টেরেসা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর কর্মচারীদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে এখন তাদের মায়ের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে ভবিষ্যতে আর যেন কেউ এই সেন্টারের কর্মচারীদের দ্বারা প্রতারিত না হয় তার আবেদন জানায়। মুড়ি-মুরকির মত গড়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলি মানুষের জন্য নূন্যতম পরিষেবার কথা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র টাকা রোজগারের নামে মানুষের গলা কেটে চলেছে বলে রাজ্যজুড়ে অভিযোগ উঠে আসছে।
0 মন্তব্যসমূহ