Advertisement

Responsive Advertisement

জল জীবন মিশনে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে প্রান্তিক জনপদগুলিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব


আগরতলা, ০৪ ডিসেম্বর: রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছানো জল জীবন মিশনের অন্যতম লক্ষ্য। পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দিতে প্রান্তিক জনপদগুলিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। ধলাই জেলা সহ রাজ্যের ১২টি অ্যাসপিরেশনাল ব্লকের জনপদগুলিতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। আজ সচিবালয়ে ২ নং সভাকক্ষে আয়োজিত জলজীবন মিশনের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। সভায় মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার শ্যামলাল ভৌমিক, অধিকর্তা রাজীব মজুমদার, পঞ্চায়েত দপ্তরের অধিকর্তা প্রসূন দে, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিষ সরকার সহ দপ্তরের সার্কেল ও ডিভিশনের বিভিন্ন স্তরের প্রকৌশলীগন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে জল জীবন মিশন রূপায়নে রাজ্যের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তৃত তথ্য তুলে ধরা হয়।
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রান্তিক এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী প্রকল্প গ্রহণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। রাজ্যে জল জীবন মিশন রূপায়নে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে কাজে আরও গতি আনা আবশ্যক। পাশাপাশি পানীয় জলের উৎসগুলির রক্ষনাবেক্ষণে পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরকে পঞ্চায়েত দপ্তরের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পানীয় জল অপচয় রোধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেন। তাছাড়া সভায় মুখ্যমন্ত্রী শহর এলাকায় পুরনো জলের পাইপগুলির প্রতিস্থাপনের বিষয়টির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সভায় পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং জল জীবন মিশন রূপায়নে রাজ্যের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি রাজ্যে পানীয় জলের প্রকল্পগুলির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, রাজ্যে ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে ৩,২৪১টি, স্মল বোড় ডিপ টিউবওয়েল ৭৫০৭টি, সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ৫৯টি, গ্রাউন্ড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ৩৯টি, ১০৮৬ আইরন রিমোভাল প্ল্যান্ট, ৩৪৩টি ইনোভেটিভ স্কীম, ৬,৫২,৮১৮টি ডোমিস্টিক কানেকশন ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া ২৩,৩৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, জল জীবন মিশন চালু হওয়ার পূর্বে রাজ্যে গ্রামীণ এলাকার ২৪,৫০২টি পরিবারে নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগ ছিল। শতাংশের নিরিখে তা ছিল ৩.৩০ শতাংশ। জল জীবন মিশন চালু হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫,৪১,৯০০ টি পরিবারে নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শতাংশের নিরিখে ৭২.৬১ শতাংশ।
সভায় দপ্তরের সচিব জল জীবন মিশন রূপায়নে জেলা ভিত্তিক নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগের তথ্যও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার লেফুঙ্গা ব্লক ১০০ শতাংশ নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগের আওতায় এসেছে। রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকগুলির নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগের অবস্থান পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেন। সচিব বলেন, টিটিএএডিসি এলাকায় ২,২২,৮৩১টি পরিবারে নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শতাংশের হার ৬৯.৩৫ শতাংশ।তিনি বলেন, ৯২.৬৮ শতাংশ বিদ্যালয় এবং ৮৪.৬৮ শতাংশ অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে পাইপের মাধ্যমে পানীয় জলের সংযোগের আওতায় আনা হয়েছে। জল জীবন মিশনে ২৪৬০টি ডিপ টিউবওয়েল খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৪৬টি চালু করা হয়েছে। ৭টি সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে ৪টি চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নল জল মিত্র কর্মসূচি সম্প্রতি সূচনা করেছেন। রাজ্যে এই কর্মসূচিতে রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটি এলাকার লোকেদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দপ্তরের সচিব রাজ্যে রূপায়িত জল জীবন মিশনের বিভিন্ন উদ্যোগসমূহ সভায় বিস্তারিত অবহিত করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ