আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর: মানুষ উন্নয়ন ও সুশাসনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিথ্যে প্রতিশ্রুতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে লড়াই তার প্রতি মানুষের সমর্থনের প্রতিফলন মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে প্রত্যক্ষ হয়েছে। এই জয় দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের জয়। এই জয় আত্মনির্ভর ভারত, সততা, স্বচ্ছতা ও সুশাসনের জয়। কংগ্রেসকে শুধু নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যায়। আর ভারতীয় জনতা পার্টি ৩৬৫ দিন কাজ করে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।
সোমবার আগরতলার কৃষ্ণনগরস্থিত ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই তিন রাজ্যের নির্বাচনে জনগণ প্রধানমন্ত্রী ও ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতি যে ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন সেজন্য তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, তেলেঙ্গানাতেও ভারতীয় জনতা পার্টি জনগণের যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছে। এই নির্বাচনের সময়ে বার বার জাতপাতের বিষয় টেনে আনা হয়েছে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানের মানুষ এই জাতপাতের বিরুদ্ধে জবাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার বার বলেন, আমাদের দেশে চারটি জাত রয়েছে। তারা হচ্ছেন - মহিলা, যুবক, কৃষক এবং গরীব অংশের মানুষ। এই চার শ্রেণীর মানুষ আত্মনির্ভর হলেই দেশ শক্তিশালী হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি যে বিরোধীরা বরাবরই জাতপাতের রাজনীতি করছেন। দেশের এই চার শ্রেণীর মানুষ প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির প্রতি যে ভরসা রেখেছেন এজন্য মুখ্যমন্ত্রী তাদের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, এই জয় প্রতিটি গরীব মানুষের জয়, নতুন ভোটার ও অনগ্রসর মানুষের জয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, তিন রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির বিপুল জয়ের জন্য নারীশক্তির প্রতি ধন্যবাদ। ভারতীয় জনতা পার্টি মহিলাদের শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মহিলাদের স্বশক্তিকরণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মানেই গ্যারান্টি। এই গ্যারান্টিরই জয় হয়েছে এবার। মহিলারা তাদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য ভারতীয় জনতা পার্টিকে বিশ্বাস করেছে। এই তিন রাজ্যে জয় মহিলাদেরই জয়। প্রধানমন্ত্রীর সুশাসনের জয়। এতদিন ধরে মোদির নেতৃত্বে গোটা দেশে যে সুশাসন চলছে এটা তারই প্রতিফলন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ফলাফলে বিজেপি ত্রিপুরা প্রদেশ কমিটিও খুবই গর্বিত বোধ করছে। তাই প্রদেশ কমিটির পক্ষ থেকে চার রাজ্যের জনগনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে।
ডা: মানিক সাহা আরো বলেন, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ফলাফল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের I.N.D.I. জোটকে মানুষ যে প্রত্যাখ্যান করেছে তিন রাজ্যের ফলাফল থেকে সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে। ফলাফল বিশ্লেষণ করলে সেটা আরো পরিষ্কার হয়ে যায়। শতাংশের হারে ছত্তিশগড়ে ৪৬.২৭ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ৪৮.৫৫ শতাংশ, রাজস্থানে ৪১.৬৯ শতাংশ ও তেলেঙ্গানায় ১৩.৯০ শতাংশ জনসমর্থন পায় ভারতীয় জনতা পার্টি। বিপরীত দিকে বিরোধী দলগুলির ফলাফল একেবারে হতাশাজনক। বামেদের অবস্থা আরো শোচনীয়। কোনো রাজ্যেই ১ শতাংশ ভোটের গন্ডিও তারা পেরোতে পারেনি। তারা যে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই ফলাফলই তার প্রমাণ। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি বঞ্চিত মানুষ সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলি থেকে উপকৃত হচ্ছেন। এই প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুরু করেছেন। তাঁর লক্ষ্য সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলির সুযোগ পৌঁছে দেওয়া। এই দিশাকে সামনে রেখে মানুষের সার্বিক কল্যাণে এগিয়ে চলছে ত্রিপুরাও। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য মহিলা ক্ষমতায়ন, যুব ক্ষমতায়ন, কৃষক ও গরীব মানুষের কল্যাণ। কেন্দ্রীয় সরকারের স্কিল ইন্ডিয়া ও মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো উদ্যোগ দেশের যুবদের স্বনির্ভর হতে অনুপ্রাণিত করছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উদ্যোগ এবং পরিকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। যা নির্বাচনের সময় এই রাজ্যগুলিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস ও সবকা বিশ্বাস নীতিকে মানুষ মন থেকে মেনে নিয়েছেন। ভারতীয় জনতা পার্টি শুধু নীতি প্রণয়ন করে না, মানুষের জন্য উন্নয়নের সুফলও নিশ্চিত করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণ হবে। আগামী লোকসভা নির্বাচনেও ত্রিপুরার দুটি আসনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীরা বিপুল জনসমর্থনে জয়যুক্ত হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য ও প্রদেশ মিডিয়া ইনচার্জ সুনীত সরকার।
0 মন্তব্যসমূহ