আগরতলা, ৯ ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গঠন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান রেখেছেন। আর এটা সম্ভব হবে যখন সমস্ত সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুবিধা সমাজের প্রান্তিক ব্যাক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকারও এই লক্ষ্যে কাজ করছে। আজ সূর্যমনিকার গ্রাম পঞ্চায়েতের কমিউনিটি হলে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতিঘরে সুশাসন ২.০ অভিযানে সুবিধাভোগীদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা একথা বলেন। ডুকলি ব্লক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণকে কিভাবে আত্মনির্ভর করা যাবে সেই ভাবনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতার সাথে দেশকে যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা প্রশংসনীয়। প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে রাজ্য সরকারও স্বচ্ছতার সাথে জনকল্যাণে কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনজাতি গৌরব দিবস উদযাপনের দিন ঝাড়খন্ড থেকে সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবা সমূহের তথ্য সমৃদ্ধ ভ্রাম্যমান প্রচার বাহনের সূচনা করে দেশব্যাপী বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সূচনা করেছিলেন। এই যাত্রার লক্ষ্য হচ্ছে সমাজের অন্তিম ব্যাক্তি পর্যন্ত সরকারি প্রকল্পের সুযোগ ও সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পগুলো সম্পর্কে জনসচেতনতা সুনিশ্চিত করা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার পাশাপাশি রাজ্য সরকার প্রতি ঘরে সুশাসন ২.০ অভিযান কর্মসূচিও শুরু করেছে। এই অভিযানে উদ্দেশ্য হল, যোগ্য অথচ এখনও পর্যন্ত যারা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাননি, তাদের
চিহ্নিত করে সেই প্রকল্পগুলির সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর প্রধানমন্ত্রী বহু জনকল্যানমূলক প্রকল্প চালু করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা, প্রধানমন্ত্রী স্ব-নিধি প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি, আয়ুম্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সৌভাগ্য যোজনা, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুকন্যা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি যোজনা, প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা, স্মার্ট সিটি মিশন, জল জীবন মিশন, প্রধানমন্ত্রী জন ঔষধি যোজনা ইত্যাদি। এই সমস্ত প্রকল্পে সমাজের সমস্ত অংশের মানুষ কোন না কোনো ভাবে উপকৃত হচ্ছেন। সুবিধাভোগীদের মধ্যে এই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা ১০০ শতাংশ পৌঁছাতে পারলেই বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা সফল হবে।
অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশের প্রত্যেক ব্যক্তির সেবা করার সংকল্প নিয়েছেন। এই সংকল্প বাস্তবে পরিনত করার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রচেষ্টারই অঙ্গ হচ্ছে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা । অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, গত ১৫ নভেম্বর থেকে রাজ্যে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা ও প্রতি ঘরে সুশাসন ২০ অভিযান একই সাথে শুরু হয়েছে। এই দুই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো যারা এখনো কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও সুবিধা পাননি তাদের চিহ্নিত করে প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করা। এই দুই কর্মসূচিতে রাজ্যের প্রতিটি গ্রামপঞ্চায়েতে, এডিসি ভিলেজে, পুর এলাকায় শিবিরের আয়োজন করে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবার সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন এমন কয়েকজন সুবিধাভোগীর সাথে মতবিনিময় করেন। এদিকে, আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুবিধা পেয়েছেন এমন কয়েকজন সুবিধাভোগীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে দেশবাসীর প্রতি বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার উদ্দেশ্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
0 মন্তব্যসমূহ