Advertisement

Responsive Advertisement

এআরসি এবং টিপিএস পদ্ধতিতে আলু চাষের জমি ঘুরে দেখলেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ

আগরতলা, ১২জানুয়ারি : রাজ্যকে আলু চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলার জন্য চারা উৎপাদনের নতুন পদ্ধতি নিয়ে আসা হয়েছে, নতুন এই পদ্ধতির নাম এপিক্যাল রুটেট কাটিং বা এ আর সি। দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর রাজধানীর লিমা শহর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে এই প্রযুক্তি। কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ নিজে মাঠে গিয়ে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলু চাষের পদ্ধতি ঘুরে দেখলেন। 
রাজ্যে মূলত আলুর ছোট কন্ধকে বীজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার বেশিরভাগ বহি:রাজ্য থেকে আমদানি করা হয়। পাশাপাশি রাজ্যে উৎপাদিত ট্রু পটেটো সীড বা টিপিএস দানা বীজ দিয়েও আলু চাষ করা হয়ে থাকে। আলুর বীজ উৎপাদনে রাজ্য এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। প্রতিবছর বহি:রাজ্য থেকে বিপুল পরিমাণে আলু বীজ আমদানি করতে হয়। যার মধ্যে অনেকাংশে বীজগুলোর গুণগত মান ভালো হয় না, ফলে চাষিরা সঠিক পরিমাণে আলুর ফলন পান না। টিপিএস পদ্ধতিতে আলুর চাষ ব্যয় সাপেক্ষ এবং ভীষণ পরিশ্রমের কাজ। তাই আরো সহজ পদ্ধতিতে আলু চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তর। তাই এআরসি পদ্ধতিতে আলু চাষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ ডিরেক্টরেট । রাজধানী আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকার উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রে এই এআরসি পদ্ধতিতে পরীক্ষা মূলক ভাবে প্রথম আলু চাষ শুরু করা হয়। এর জন্য এখানে অত্যাধুনিক সেড তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে পরীক্ষা মূলক ভাবে আলু চাষ করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যের আট জেলার ১০০ জনের বেশী কৃষককে এআরসি পদ্ধতিতে আলু চাষ করার জন্য দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করে রাজ্যকে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আলু বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। 
শুক্রবার নাগিছড়ার উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন রাজ্যের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এআরসি পদ্ধতিতে আলুর চাষ পরিদর্শন করেন সেই সঙ্গে টিপিএস পদ্ধতিতে কি ভাবে সূর্যাস্তের পর ও কৃত্রিম আলো জ্বালিয়ে আলুর চাষ করা হচ্ছে তা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এমনকি মন্ত্রী এআরসি পদ্ধতিতে উৎপাদিত ৫ জাতের আলু এদিন নিজে খেয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। এই আলো সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন অত্যন্ত সুস্বাদু।
সেই সঙ্গে মন্ত্রী আরো জানান রাজ্যকে কৃষিতে স্বয়ংবর করে তুলতে সরকার কাজ করছে। পাঁচ বছরের মধ্যে আলু বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা হবে।
পাশাপাশি তিনি দপ্তরের আধিকারিক সহ বাগিচায় কর্মরত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে ডুকলী কৃষি মহকুমার দশ জন প্রগতিশীল কৃষকের হাতে উন্নত জাতের আদা তুলে দেন। এগুলো তাদেরকে দেওয়া হয় চাষ করার জন্য। 
এদিন কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রীর পাশাপাশি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, কৃষি অধিকর্তা ড. শরদিন্দু দাস এবং উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ ডিরেক্টরেটের অধিকর্তা ড. ফণীভূষণ জমাতিয়া, ডেপুটি ডিরেক্টর এবং উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ড. রাজীব ঘোষসহ গবেষণা কেন্দ্রের অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ড. রাজীব ঘোষ মন্ত্রীকে গোটা গবেষণা কেন্দ্র চত্বর ঘুরিয়ে দেখান। মন্ত্রী একেবারে মাঠে নেমে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেন। সেই সঙ্গে গবেষণা কেন্দ্রে লাগানো বিভিন্ন মরশুমি সবজি ও স্ট্রবেরি ক্ষেত ঘুরে দেখেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ