আগরতলা, ৩ জানুয়ারী : রাজ্যের কৃষকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে তাদের কাছ থেকে কুইন্টাল প্রতি ২১টাকা ৮৩পয়সা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে চলতি খারিফ মরসুমে উৎপাদিত ধান ক্রয় কর্মসূচি চলছে। এর অঙ্গ হিসেবে বুধবার পশ্চিম জেলার জিরানীয়া মহাকুমার কৃষকদের সুবিধার্থে সহায়ক মূল্যের ধান ক্রয় কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন খাদ্য জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। জিরানীয়ার মাধববাড়িস্থিত আন্তঃ রাজ্য ট্রাক টার্মিনাসে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধনে মন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার, অধিকর্তা নির্মল অধিকারী, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, জিরানীয়া নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন রতন দাস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর কৃষকদের আয় কিভাবে দ্বিগুণ করা যায় তার জন্য রাজ্য সরকার প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। ২৫ বছর কৃষক বন্ধুদের সাথে প্রতারণা করে গেছে অতীতের সরকার। রাজ্য সরকার প্রতিটি কৃষি মহকুমায় আধুনিক কৃষি পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ করছে। যাতে করে কৃষকরা তাদের রোজগার বৃদ্ধি করতে পারে । কৃষকদের আধুনিক যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে সার বীজ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রতিটি কৃষি মহকুমায় কৃষক বন্ধু কেন্দ্র ও কৃষক জ্ঞান অর্জন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য পায় তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষক বন্ধুদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষকরা খোলাবাজারে ধান বিক্রি করে যে দাম পান তার থেকে অনেক বেশি দাম পান সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রে। শুধুমাত্র কৃষকরাই যাতে এই সুবিধা পান তাঁর জন্য সচেষ্ট রয়েছে সরকার। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে কুইন্টাল প্রতি ২১৮৩ টাকা দরে ধান ক্রয় করছে। এবছর রাজ্য সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ৫০,০০০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে। ধান ক্রয় কেন্দ্রে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের কোনোভাবেই যাতে হয়রানির শিকার না হতে হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য উপস্থিত আধিকারিকদের নির্দেশ প্রদান করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী নাম না করে বিরোধীদের কঠাক্ষ করে বলেন, তাদের সময় সরকার কৃষকের ধান কিনুক এই দাবিই শুধু করা হতো। আর তাদের দিয়ে মিছিল করানো হতো। অথচ ২০১৮ সালে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম মন্ত্রীসভার বৈঠকেই কৃষকের ধন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং দ্রুত কার্যকরী হয়। মন্ত্রী বলেন সরকারি ভাবে কৃষকের ধান ক্রয়ের পরিমানের লক্ষমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মরসুমে ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধন কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করার লক্ষমাত্রা রেখেছে সরকার। কোন রকম মধ্যস্বত্ত ভোগী ছাড়া সহায়ক মূল্যে সরাসরি সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষকরা।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের রাজ্যের কৃষকবন্ধুদের প্রতি রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা সর্বদাই সহানুভূতিশীল। তাঁর নির্দেশেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে আবারও ধান কেনার কাজ শুরু হয়েছে। কৃষকরা খোলাবাজারে ধান বিক্রি করে যে দাম পান তার থেকে অনেক বেশি দাম পান সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রে। শুধুমাত্র কৃষকরাই যাতে এই সুবিধা পান তাঁর জন্য সচেষ্ট রয়েছে আমাদের কৃষকবন্ধু সরকার।
তিনি রাজ্যের কৃষকবন্ধুদের কাছে অনুরোধ করে বলেন, আপনারা আপনাদের নিকটবর্তী কৃষি বিভাগ বা মহকুমা শাসকের দফতরের সাথে যোগাযোগ রেখে আপনাদের ধান বিক্রয় করুন এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রয়ের সুবিধা গ্রহণ করুন। সব কৃষক যাতে সরকারি সহায়ক মূল্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে।
0 মন্তব্যসমূহ