আগরতলা, ৩ ফেব্রুয়ারী : রাজ্যে ক্রমবর্ধমান ফুলের চাহিদার কথা চিন্তা করে ফুল চাষে গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল হর্টিকালচার মিশন প্রকল্পে ইন্দো-ডাচ প্রযুক্তিতে একটি সেন্টার অফ এক্সসিলেন্স ফর ফ্লোরিকালচার স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সামাজিক অনুষ্ঠান এমন কি শেষযাত্রা সব কিছুতেই ফুলের প্রয়োজন। তাই রাজ্যেও প্রতিদিন প্রচুর ফুলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন রাজ্যের চাহিদার প্রায় ১০০শতাংশ ফুলের জন্য বহিঃরাজ্যের উপর নির্ভরশীল ছিল। সবচেয়ে বেশী ফুল আসতো কোলকাতা থেকে, আবার কিছু কিছু ফুল আসতো বেঙ্গালুরু থেকে। একদিন ভিন রাজ্য থেকে ফুল না এলে রাজ্যে আকাল পড়ে যেতো। রাজ্যে ফুলের বিপুল চাহিদা থাকার পরও রাজ্যে ফুল চাষের জন্য সরকারী ভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে চাষীদের ইচ্ছে থাকলেও ফুল চাষ করতে পারেননি।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে ফুলের চাহিদার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চাষীদের ফুল চাষের বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে সহায়তা করা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে "মুখ্যমন্ত্রী পুষ্প উদ্যান প্রকল্প" চালু করা হয়। এর ফলে রাজ্যে ফুল চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে বাণিজ্যিক ভাবে ৫৯০হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয় এবং ফুল চাষীর সংখ্যা ১,৬৯৩ জন। এমন কি রাজ্যে ফুলচাষের জন্য সরকারী নার্সারী চালু করা হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে সরকারী নার্সারী রয়েছে ৪টি এবং বেসরকারী নার্সারী রয়েছে ৪৪ টি।
রাজ্যে ফুল চাষ বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্প উদ্যান প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল হর্টিকালচার মিশন প্রকল্পের এবং স্টেট প্ল্যান-র অর্থানুকূল্যে ফুল চাষিদের গাঁদা, গ্ল্যাডিওলাস, রজনীগন্ধা এবং গোলাপ ইত্যাদি ফুল চাষে সহায়তা দেওয়া হয়।
তাছাড়া ন্যাচারালি ভেন্টিলেটেড পলি হাউস তৈরীর মাধ্যমে বিদেশী ফুল যথা অর্কিড, এন্থোরিয়াম এবং জারবেরা ফুল চাষেও কৃষকদের সহায়তা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ফুল চাষের উপরও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রাজধানী আগরতলার পার্শবর্তী নাগিছড়া এলাকার উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রে নিয়মিত ভাবে ফুল চাষীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
তাছাড়া হাইটেকের মাধ্যমে উন্নতমানের দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন ফুলের চারা উৎপাদনের ও প্রদর্শণীর জন্য পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার লেম্বুছড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল হর্টিকালচার মিশন প্রকল্পে ইন্দো-ডাচ প্রযুক্তিতে একটি সেন্টার অফ এক্সসিলেন্স ফর ফ্লোরিকালচার স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই কেন্দ্রটি চালু হলে এখানে একদিকে যেমন চাষীরা নানা জাতের ফুল চাষের প্রশিক্ষন নিতে পারবেন তেমনি দেশ-বিদেশের নানা জাতের ফুল চাষ এবং চারা উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা করতে পারবেন চাষীরা। এর ফলে রাজ্যে ফুল চাষের নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
0 মন্তব্যসমূহ