আগরতলা, ১২ ফেব্রুয়ারি: মহিলাদের ক্ষমতায়ন হলেই দেশ এবং রাজ্যের অগ্রগতি সম্ভব। মহিলাদের ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও খুবই আন্তরিক। এই দিশাতেই প্রধানমন্ত্রীর ভাবনাকে সামনে রেখে আর্থ -সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে কাজ করে চলেছে আমাদের সরকার। এক্ষেত্রে বিভিন্ন স্বসহায়ক দলের ভূমিকাও তাৎপর্যপূর্ণ।
সোমবার আগরতলার এডিনগরে ৩৯ নং পুর ওয়ার্ডের কনফারেন্স হলে আয়োজিত বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ৩৯ নং পুর ওয়ার্ডের সহায়তায় প্রজেক্ট মুসকানের (MUSKAAN) অধীনে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও অভিযান খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ আমাদের বেটিদের রক্ষা করতে হবে। ভ্রূণ হত্যা একটা খুবই গর্হিত অপরাধ। আল্ট্রা সনোগ্রাফির মাধ্যমে পরীক্ষার পর ভ্রূণ হত্যা করা হয়ে থাকে। যেটা আমরা সবাই জানি। আর সেই পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যেতো যে ছেলে হবে না মেয়ে। এরজন্য আইন হয়েছে। মেয়েরা যদি না থাকে তবে সমাজ কি করে চলবে? হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীদের দেবীর পুজো করতে হয়। সেক্ষেত্রে কেন একচক্ষু নীতি থাকবে? তবে তো মানব সভ্যতাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এর উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। শুধু বেটি বাঁচা নয়, তাকে পড়াশুনা করিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করাই এর অন্যতম লক্ষ্য। যাতে সে নিজের পায়ের উপর দাঁড়িয়ে আত্মনির্ভর হতে পারে। যেমন বিমানে ভ্রমনের সময়ে আমরা দেখি অনেক পাইলট মহিলা। আবার জিমন্যাস্টিক্স এর ক্ষেত্রেও মেয়েরাই এগিয়ে রয়েছে। পড়াশুনার ক্ষেত্রেও ইউনিভার্সিটি হোক বা টিবিএসই বা সিবিএসই ফলাফলের সময়ে প্রথম ১০ জনের মধ্যে মেয়েরাই থাকে। দেখা যায় মেয়েরাই ভালো রেজাল্ট করে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আরো বলেন, কিছুদিন আগে টিএসআর জওয়ানদের পাসিং আউট প্যারেডে মহিলা জওয়ানরা খুবই ভালো প্রদর্শন করেছে। যা প্রত্যক্ষ করে আমিও অভিভূত হয়েছি। তারা খুবই ভালো প্যারেড করেছে। তিনি বলেন, আমাদের মেয়েরা কোনদিক দিয়ে কম নয়। নারীদের সবদিক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ডাবল ইঞ্জিনের সরকার। কারণ একটা ঘরের মধ্যে যদি মেয়ে না থাকে তবে ঘর কোন অবস্থায় সুন্দর হতে পারে না। সমাজেও যদি মেয়েদের উপস্থিতি না থাকে তবে সেই সমাজ কখনো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। তবে কেন এটা ৫০: ৫০ হবে না? পরিসংখ্যানে সমান সমান হতে হবে। সব জায়গার মধ্যে ভারসাম্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবক্ষেত্রেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বাধারঘাটের বিধায়ক মীনা রাণী সরকার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডাঃ বিশাল কুমার সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। এদিন অনুষ্ঠানে কন্যা সন্তানদের সংবর্ধনা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ