আগরতলা, ২৭ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। চিকিৎসা পরিষেবাকে সকল অংশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আরো ১০০টি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এজন্য বাজেটে আর্থিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। রাজ্যে একটি মেডিকেল হাব গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে সরকার। এর পাশাপাশি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিশাতেই বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করে চলেছে এই সরকার।
মঙ্গলবার গোমতী জেলা হাসপাতালে নবনির্মিত মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের আনুষ্ঠানিক দ্বারোদ্ঘাটন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বেশকিছু বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এরমধ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্র অন্যতম। যেকোন রাজ্য বা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের অন্যতম একটি শর্ত সেখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নের সাথে জড়িত দেশের সার্বিক সমৃদ্ধির চিত্রও। কোভিড মহামারির সময়ে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলি যাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত ছিল, তারাও কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হিমশিম খেয়েছে। সেই জায়গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য দিক নির্দেশনায় কোভিডের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করেছে গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরনায় আমাদের বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে গোটা দেশবাসীকে রক্ষা করেছেন। শুধু দেশবাসীকে রক্ষা করা নয়, বিশ্বের আরো ১০০টির অধিক দেশকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করে কোভিডের হাত থেকে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিশায় এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা রাজ্যও। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশের জন্য আয়ুষ্মান কার্ড চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যেখানে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বীমা পাবেন মানুষ। ডাঃ সাহা বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে দেশের উন্নতি হবে না। রাজ্যেও প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষের কাছে আয়ুষ্মান কার্ড বণ্টন করা হয়েছে। বাকি আরো প্রায় ৪.৫ লক্ষ মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় কার্ড প্রদান সম্প্রতি শুরু হয়েছে। এতে মানুষ খুবই উপকৃত হবেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবাকে আরো শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর ধরে ডাক্তারদের কোন প্রমোশন ছিল না। এই সরকার আসার পর ডাক্তারদের প্রমোশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে দুটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। আরো একটি মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরায় এখন শান্তি বিরাজ করছে। এতদিন এখানে অশান্তির পরিবেশ ছিল। অহিংসার রাজনীতি মানুষ পছন্দ করে না। ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচন একেবারে শান্তিপূর্নভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি ধনপুর ও বক্সনগর উপনির্বাচনও কোন ধরনের অঘটন ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায়, কমলপুর নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান প্রশান্ত সিনহা, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সুপ্রিয় মল্লিক, জেলা পুলিশ সুপার নমিত পাঠক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আর্থিক সহায়তায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই নবনির্মিত ভবন তৈরি করতে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
0 মন্তব্যসমূহ