আগরতলা, ২ ফেব্রুয়ারি: ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশে বিজ্ঞান প্রদর্শনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কোনও দেশ বা রাজ্যের উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম সোপান হচ্ছে বিজ্ঞান চর্চা ও তার সঠিক ব্যবহার। বর্তমান সময়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ মহারাণী তুলসীবতী উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে দু'দিনব্যাপী ৫১তম রাজ্যস্তরীয় বাল বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য, এবারের প্রদর্শনীর মূল ভাবনা হচ্ছে 'সমাজ কল্যাণের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি'। রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে ৫টি করে মোট ৪০টি মডেল এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই ছাত্রছাত্রীদের মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। দেশাত্মবোধের ভাবনা তাদের মধ্যে জাগ্রত করতে হবে। জনগণের কাজে আসে এমন উদ্ভাবনী কাজে ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশি করে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শিক্ষাদান ও তাদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মনের গভীরে রেখাপাত তৈরি করে যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে সুগম করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পড়াশুনার পদ্ধতি ও বিষয়সমূহ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গতানুগতিক শিক্ষাদানের উর্ধে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলিকে বিদ্যালয়ের পাঠদানে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শিতায় দীর্ঘদিন পর দেশে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ইতিমধ্যেই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করা হয়েছে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আগামীদিনে শিক্ষা ব্যবস্থায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলার উপরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এরফলে ছাত্রছাত্রীদের মনন ও চেতনার বিকাশ ঘটবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কম জনসংখ্যার দেশ ইজরায়েল প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক উন্নত। পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলি ইজরায়েলের প্রযুক্তির দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। তিনি বলেন, আমাদের দেশেও ডিজিটাইজেশনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছ প্রশাসনের লক্ষ্যে রাজ্যেও ডিজিটাইজেশনের অঙ্গ হিসেবে ই-ক্যাবিনেট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তাছাড়া সরকারি প্রতিটি দপ্তরে ই-অফিস চালু করা হয়েছে। শুধু তাই নয় জেলা ও মহকুমা অফিসগুলিতেও এই ব্যবস্থাপনা চালু করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসসিইআরটি'র অধিকর্তা এন সি শর্মা, এলিমেন্টারি এডুকেশনের অধিকর্তা শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, স্টেট এনভায়ারনমেন্ট ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান ড. জওহরলাল সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী 'কণাদ' শীর্ষক স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের প্রদর্শিত মডেলগুলি ঘুরে দেখেন।
0 মন্তব্যসমূহ