আগরতলা, ১৩ ফেব্রুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন উন্নয়ন ছাড়া কোন কথা হবে না। আর উন্নয়নের কোন ধর্ম হয় না। পরিশ্রুত পানীয় জল থেকে শুরু করে ঘর প্রদান, বিদ্যুৎ সংযোগ, আয়ুষ্মান ভারত কার্ড প্রদান ইত্যাদি জনমুখী কার্যক্রমে কোন রাজনীতি হয় না। সবদিক দিয়েই মানুষকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার মানেই উন্নয়নের সরকার।
মঙ্গলবার আগরতলার নাগেরজলায় পুরাতন অটোরিক্সা স্ট্যান্ডে ইন-সিটু নালা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং অর্গানিক ফার্মের মাধ্যমে উদ্যান/ ফুলচাষের পাইলট প্রজেক্টের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী প্রজন্মের কাছে সুন্দর ও সুরক্ষিত আগরতলা উপহার দেওয়া। আগরতলা শহরকে দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষনীয় করে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এরমধ্যে রয়েছে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের পেছনের দিকটিকে সংস্কারের মাধ্যমে সৌন্দর্য্যায়ন করে বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, ফুড কোর্ট স্থাপন, অ্যাম্ফিথিয়েটার স্থাপন, উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের জোড়া জলাশয়ের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা এবং সংস্কার, উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের পশ্চিম দিকের জলাশয়ের স্থায়ী ফোয়ারা তৈরী করা, হাওড়া রিভারফ্রন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হাওড়া রিভারফ্রন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট রূপায়ণের মাধ্যমে হাওড়া নদীর ভাঙ্গন রোধ সহ পরিবেশবান্ধব পাবলিক স্পেস গড়ে তোলা হবে। রাজ্যের জনগণের প্রয়োজনের স্বার্থে এবং চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার প্রতিনিয়ত উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। আগরতলা শহরকে দেশের অন্যতম একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নগরোন্নয়ন দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করা হচ্ছে। স্মার্ট সিটিকে সুন্দর রাখার ক্ষেত্রে আমাদেরও স্মার্ট হতে হবে। আজ যে সমস্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে তা রক্ষনাবেক্ষণের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বার বার বলে থাকেন যে উন্নয়ন ছাড়া কোনও কথা নেই। প্রধানমন্ত্রী অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির মাধ্যমে আমাদের রাজ্যে হীরা মডেল উপহার দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলেই রাজ্যে বর্তমানে ৬টি জাতীয় সড়ক রয়েছে এবং আরও ৪টি জাতীয় সড়কের নীতিগতভাবে মঞ্জুরি পাওয়া গেছে। এছাড়াও ৪টি রোপওয়ে স্থাপনের মঞ্জুরি পাওয়া গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলেই রাজ্যে বর্তমানে ১৭ থেকে ১৮টি এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে চলাচল করছে। আগরতলা আখাউড়া রেলপথে ট্রায়াল রানও সম্পন্ন হয়েছে। সাব্রুমের মৈত্রী সেতু চালু হলে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার একটা নতুন দিগন্ত তৈরী হবে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুর নিগমের কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব জানান, স্টিল ব্রীজ থেকে দশমীঘাট পর্যন্ত (২ কিলোমিটার) হাওড়া রিভারফ্রন্ট ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছে। এরজন্য ব্যয় করা হবে ৮৪ কোটি টাকা। গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এছাড়াও স্মার্ট সিটি, আগরতলা পুর নিগম, আমরুত এবং পূর্ত দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আগরতলা শহরের উন্নয়নে ৪৪০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ রূপায়ন করা হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, কর্পোরেটর জাহ্নবী দাস চৌধুরী, কর্পোরেটর বাপী দাস,বনগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, আগরতলা পুরনিগমের অতিরিক্ত কমিশনার মহম্মদ সাজ্জাদ প্রমুখ।
এদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের অর্থানুকল্যে এবং আগরতলা স্মার্ট সিটি লিমিটেডের অন্তর্গত বিভিন্ন চলমান কাজগুলি পরিদর্শন করেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের পেছনের স্থানটির রক্ষনাবেক্ষন, সংস্কার ইত্যাদি কাজগুলি পরিদর্শন করেন। এছাড়াও উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের দু'পাশে দু'টি জলাশয়ের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং সংস্কারের লক্ষ্যে যেসমস্ত কাজ করা হচ্ছে সেটা পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি শিশু উদ্যানের সৌন্দর্য্যায়নের লক্ষ্যে চলা কাজকর্ম পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
0 মন্তব্যসমূহ