আগরতলা, ৩১ মার্চ: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের দুটি আসনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় বিপুল জনসমাগম প্রত্যক্ষ হয়েছে। মানুষের এই স্বতস্ফূর্ত সমর্থন ও আশীর্বাদ থেকে এটাই নিশ্চিত যে ত্রিপুরার দুটি আসনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়যুক্ত হবেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীরা।
রবিবার গোমতী জেলার গর্জিতে এক নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আসন্ন লোকসভা ভোটে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে আয়োজিত এই সমাবেশে মহিলাদের ব্যাপক উপস্থিতি প্রত্যক্ষ হয়েছে।
সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩৭০ এর টার্গেট দিয়েছেন। মানুষের সমর্থন আর আশীর্বাদে সেই সংখ্যা ৪০০টির অধিক পার হতে পারে। সেই দিশা নিয়েই কাজ করছেন ভারতীয় জনতা পার্টির সকল স্তরের কার্যকর্তাগণ। এবার পশ্চিম ত্রিপুরা আসনে বিপ্লব কুমার দেব এবং পূর্ব ত্রিপুরা আসন থেকে কৃতি সিং দেববর্মা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা যখন উভয় আসনে মনোনয়ন দাখিল করতে যাই, তখন বিপুল জনসমাগম প্রত্যক্ষ হয়েছিল। আর মানুষের ব্যাপক সমর্থন ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আগামী ৪ তারিখ কী হতে চলেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি রাজ্যের দুটি লোকসভা আসনেই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়যুক্ত হবে।
সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, মহিলারা শক্তিশালী না হলে দেশকে শক্তিশালী করা সম্ভব নয়। নারীদের ক্ষমতায়ন ও শক্তিশালী করার জন্য চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করেছে সরকার। সেই সঙ্গে সরকারি স্টল বন্টনেও সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। এছাড়াও, অন্যান্য ক্ষেত্রে মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে পূর্বতন সরকারের শাসন ব্যবস্থা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে সিপিএম ও কংগ্রেসকে বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর ভাষায় বিদ্ধ করেন তিনি।
বিশেষ করে বিগত নির্বাচন ও এবারের লোকসভা নির্বাচন সিপিএম ও কংগ্রেসের অশুভ জোট নিয়ে ফের একবার তুলোধুনো করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, কমিউনিস্ট ও জোট সরকারের আমলে রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিস্থিতি কায়েম করে রাখা হয়েছিল। আর এখন বিরোধীরা দাবি করছে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল নয়। যদিও বর্তমানে সর্বভারতীয় রেকর্ডে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে দেশের ২৮টি প্রদেশের মধ্যে নিচের দিক থেকে ত্রিপুরা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। যা গত বছর ছিল পঞ্চম স্থানে। অথচ তাদের শাসনামলে রাজ্যে নির্বাচন মানেই ছিল সন্ত্রাস, সহিংসতা। কিন্তু ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে কোনো সহিংস ঘটনার নজির নেই।
সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে এবং তাদের সমর্থন পেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপর আশীর্বাদের জন্য আমাদের অবশ্যই মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। দেশকে শক্তিশালী করতে হলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। প্রধানমন্ত্রী সবসময় মানুষের জন্য কাজ করেন এবং কাজের বাস্তবায়নে গ্যারান্টি দেন। আর সেই গ্যারান্টির বাস্তবায়নেও গ্যারান্টি দিচ্ছেন। রাজ্যে বিগত ৩৫ বছরে বহু মানুষ সহিংসতার বলি হয়েছেন। তখন নির্বাচনের সময়কালে প্রাণের ভয়ে বিরোধী দলের সদস্যদের রাজ্য পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে। আর এখন এটাও দুর্ভাগ্যজনক যে কংগ্রেস সিপিএম-এর সাথে জোটবদ্ধ হয়েছে এবং সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে জোট গঠন করেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়া। কিন্তু সময়ের সাথে সেটা ইন্ডি হয়ে যাচ্ছে। আর এই জোটের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এদিন এই সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শুক্লাচরন নোয়াতিয়া, বিধায়ক অভিষেক দেবরায় সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
এদিকে এদিনই ৩৩ কাকড়াবন - শালগড়া বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই সভায় কাকড়াবন মন্ডলের প্রবীণ নাগরিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ যোগদান করেন।
0 মন্তব্যসমূহ