আগরতলা, ১৪ মার্চ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'ভোকাল ফর লোকাল' স্লোগান বাস্তবে রূপায়ণ করতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ত্রিপুরা। রাজ্যে আজ প্রথম চা নিলাম কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হল। এতে চা বাগান মালিকরা সহজেই চা পাতা বিক্রির সুযোগ পাবেন। তাছাড়া চা উৎপাদকরাও নায্য মূল্য পাবেন। বৃহস্পতিবার আগরতলার গুর্খাবস্তিতে রাজ্যের প্রথম চা নিলাম কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, এক সময় রাজ্যের চায়ের কোন পরিচিতি ছিল না। বর্তমান রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে চায়ের ব্র্যান্ড সহ লোগো চালু করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগে বহিরাজ্যে এখন রাজ্যের চায়ের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাজন্য শাসিত ত্রিপুরায় মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্য প্রথম রাজ্যের চা শিল্পের পত্তন করেন। কৈলাশহরে রাজ্যের প্রথম চা বাগান হিরাছড়া গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সারা রাজ্যে ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর এলাকায় চা চাষ হচ্ছে। রাজ্যে ৫৪টি চা বাগান রয়েছে। কিন্তু একটা সময় রাজ্যের এই চা শিল্প প্রায় ভগ্নদশায় পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বর্তমান রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে রাজ্যের চা আবার মর্যাদা ফিরে পেয়েছে। আগে রাজ্যের চা বিক্রির জন্য চা বিক্রেতাদের বাইরে যেতে হত। এই চা নিলাম কেন্দ্র গড়ে উঠলে রাজ্যেই চায়ের বেচা-কেনা সম্পন্ন করা যাবে। এতে বাইরে চা নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ আর লাগবে না। প্রতিবছর ভাল পরিমাণ চা পাতা রাজ্যেই উৎপাদিত হয়। দেশের মধ্যে চা পাতা উৎপাদনে রাজ্যের স্থান পঞ্চম।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার চা শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। চা শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করে এখন দৈনিক ১৭৬ টাকা করা হয়েছে। চা শ্রমিকদের ২ গন্ডা করে বসবাস করার জন্য জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে এই সরকার। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৭৭ জন শ্রমিককে ২ গন্ডা করে জমির পাট্টা বিতরণ করা হয়েছে। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চায়ের উপর পাঠ্যক্রম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের উৎপাদিত পণ্যের উপর ভিত্তি করে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলছে এই সরকার। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বাঁশ এবং রাবার ভিত্তিক শিল্পের বিভিন্ন দিকের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে ত্রিপুরার চা আগামী দিনে রাজ্যকে আত্মনির্ভরতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ দেখাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা বিশ্বশ্রী বি. সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ