আগরতলা, ১১ মার্চ: রাজ্যে একটা সময় নাস্তিকতার পরিবেশ গড়ে তুলেছিল তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন বর্তমান রাজ্য সরকার মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। তাই রাজ্যের মানুষ এখন নিজেদের ধর্মীয় অনুভূতিকে নাস্তিকতাকে দূরে সরিয়ে বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার দিকে ইতিবাচক পরিবর্তনকে গ্রহণ করেছে।
সোমবার উনকোটি জেলার ফটিকরায়ে তিরুপতি বালাজি মদিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। সম্পূর্ন দক্ষিণ ভারতীয় স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি হয়েছে এই ভব্য মন্দির।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, শৃঙ্গেরি বালাজি মন্দিরের উদ্বোধন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠার শুভক্ষন একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই দশক ভারতের বিশ্বগুরু হওয়ার একটা প্রারম্ভিক যাত্রা। গত ১০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ বহু কৃতিত্ব অর্জন করেছে এবং সুনামের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি দেশ তার হৃত গৌরব ফিরে পাচ্ছে। ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ - ১৫ বর্ষে পর্যটন মন্ত্রকের অধীনে দেশের তীর্থ স্থানগুলি সংস্কার ও পুনঃনির্মাণের জন্য প্রসাদ প্রকল্প চালু করেছেন। ২০২১ সালে কাশি বিশ্বনাথ ধামের বিকাশ করা হয়। এরফলে এখন কাশি ধামে প্রচুর পরিমাণে ভক্তরা যাচ্ছেন। শুধু দেশের নয়, বিদেশ থেকেও দর্শনার্থীরা কাশি ধাম দর্শন করতে আসছেন। এধরনের উদ্যোগ শুধু ধর্মীয় অনুভূতিকে শক্তিশালী করে না, অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বদলে যাবে এই মন্দিরের দৃশ্যপট। জনগণের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের সুবিধার্থে আমরা রাস্তাও নির্মাণ করেছি। আমরা কখনই ভাবিনি যে ত্রিপুরায় এমন সুন্দর মন্দির তৈরি হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি আগামী দিনে সনাতনী ভাবধারার প্রসার ও আধ্যাত্মিক চেতনা এবং পর্যটনের বিকাশে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। আজ প্রচুর সংখ্যক পূণ্যার্থীর সমাগমের মধ্য দিয়ে মহাসমারোহে আয়োজিত এই মন্দিরের উদ্বোধনী পর্ব তথা প্রাণ প্রতিষ্ঠার শুভক্ষনে সাক্ষী হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এই মন্দির স্থাপনের জন্য আমি কর্নাটকের শ্রী সারদা পীঠম ট্রাষ্টকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ বিকাশের দিশায় এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেদারনাথ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে সংস্কার করা হয়েছিল ও তীর্থযাত্রীদের কাছে সপে দেওয়া হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্যই প্রথমবারের মতো কোন মুসলিম দেশে একটি মন্দির স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। যা আমরা কখনই ভাবিনি। আমরা দীর্ঘ প্রায় ৫০০ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য। শেষপর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কারনে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। রাজ্যেও একটা সময় ছিল যখন তৎকালীন সরকার নাস্তিকতার পরিবেশ তৈরি করেছিল। কিন্তু এখন আস্তিকতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কারণ ঈশ্বর ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল এল এ গণেশন, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, তপশিলী জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিক অভিষেক চন্দ্র, প্রফেসর অমৃত কুমার ভট্টাচার্য সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ