Advertisement

Responsive Advertisement

যুবদের ছাড়া দেশ ও রাজ্য শক্তিশালী হবে না এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাবে না : মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ২৩ মার্চ: দেশ ও রাজ্যের অন্যতম শক্তি হচ্ছে যুব সম্প্রদায়। তাদের ছাড়া দেশ ও রাজ্য এগিয়ে যাবে না। তারা শক্তিশালী হলে দেশ ও রাজ্য শক্তিশালী হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সবসময় যুব শক্তিকে অগ্রাধিকার দেন। আসন্ন নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে। রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী কংগ্রেস সিপিএম ঘোলা জলে মাছ ধরতে চায়। 
                         শনিবার আগরতলায় ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার উদ্যোগে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচন ও রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে সামনে রেখে এদিন যুব মোর্চার উদ্যোগে আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন চত্বর থেকে এক সুবিশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে প্যারাডাইস চৌমুহনিতে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। 
                       পরে প্যারাডাইস চৌমুহনিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় বলেন আমাদের দেশের লোকসংখ্যার ৬৫ শতাংশ হচ্ছে যুব সম্প্রদায়। পৃথিবীর যেকোন জায়গায় গেলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে যুব শক্তি। আজকেও ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবরা এসে এই বিশাল সমাবেশে জড়ো হয়েছে। এজন্য আমি খুবই আনন্দিত। ত্রিপুরায় আগে আমরা আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি প্রত্যক্ষ করেছি। আর নির্বাচন আসলে তো কথাই নেই। বিরোধীদের দমিয়ে রাখার জন্য খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ করা হতো। নির্বাচনের পর অনেকের রাজ্য ছেড়েও পালিয়ে যেতে হতো। কিন্তু এখন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। গত বছর ২৮টি প্রদেশের মধ্যে নিচের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে ছিল। আর এখন তৃতীয় স্থানে চলে এসেছে। সেটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টির নীতির কারণে। প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন শান্তি শৃঙ্খলা না থাকলে কোন রাজ্য বা দেশ কখনো উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা দেশ থেকে মানুষ ত্রিপুরায় আসতে চাইছেন, বিনিয়োগ করতে চাইছেন। রাজ্যে এখন জিডিপির পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। 
                     সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, সমাজের প্রতিটি মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুরু করেছেন। সেই দিশায় রাজ্য সরকারও প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচি শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলছেন সমস্ত বেনিফিসিয়ারিদের কাছে জনমুখী প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দিতে হবে। ত্রিপুরা রাজ্যেও বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার প্রচার গাড়ি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যেগুলি রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে পৌঁছে গিয়েছে। মানুষের কাছে মৌলিক সুবিধাগুলি পৌঁছে দিতে কাজ করছে এই সরকার। ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচন ত্রিপুরার ইতিহাসে কখনো হয় নি। কোনরকম অঘটন বা গণ্ডগোল ছাড়া এত শান্তিপূর্ন নির্বাচন কখনো হয় নি রাজ্যে। আর সেটাই আমরা করে দেখিয়েছি। এদিন কংগ্রেস ও সিপিএমের অশুভ জোট নিয়ে আবারও তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই তারা প্রচার শুরু করে দেয় যে 'এবার আইয়া পড়তাসি' বলে। ২০২৩ নির্বাচনেও সেটা হয়েছে। আমাদের মধ্যেও অনেকে এতে প্রভাবিত হয়েছিলেন। কিন্তু মানুষই ভারতীয় জনতা পার্টিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কারণে। পরবর্তী সময়ে ধনপুর ও বক্সনগর উপনির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হয় ভারতীয় জনতা পার্টি। বক্সনগরে ৩০ হাজারের অধিক ভোটে জয়ী হয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী। এমনকি বিরোধীদের জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমাদের নীতি হচ্ছে সবাইকে নিয়ে চলা। আমরা মারপিটে বিশ্বাস করি না। কিন্তু কংগ্রেস ও সিপিএমের নীতি হচ্ছে ঘোলা জলে মাছ ধরা। 
                                মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস ও সিপিএমের রাজনীতি দেখলে দুঃখ হয়। দেখা গেলো কংগ্রেসের অফিসে গিয়ে সিপিএমের জিতেন বাবু বসে রয়েছেন। এরআগে সিপিএমের অফিসে কংগ্রেসের নেতারা বসেছেন। দুঃখ লাগে যে এমন দৃশ্যও আমাদের দেখতে হবে। এখন কংগ্রেস ভবন থেকে সিপিএমের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন বের হয়। আর সিপিএমের ঘর থেকে কংগ্রেসের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন বের হয়। এটাও কি ভাবা যায়? সমাবেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এবার পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীর বিপরীতে সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেসের নেতা আশিস কুমার সাহা। সিপিএমের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন নিয়ে তিনি মিছিলে বেরিয়েছেন। কারণ তাদের পায়ের তলায় এখন আর জমি নেই। লোকজনও নেই। সত্যি করুণ অবস্থা তাদের। শেষপর্যন্ত এটাও দেখে যেতে হবে আমাদের। আমরা সঠিক পথে আছি। তারা ভুল পথে গিয়েছে। বিরোধীরা ইন্ডিয়া জোটের কথা বলছে। আর সেই জোট এখন ইন্ডিয়া থেকে ইন্ডি হয়ে গেছে। কিছুদিন পরে শুধু আই পরে থাকবে। যা অনেকটা শোলে সিনেমার আশরানির মতো অবস্থা। 
                          মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভারতীয় জনতা পার্টি সঠিক দিশায় চলছে। আগে আমাদের আইপিএফটির সঙ্গে জোট ছিল। আর এখন আমাদের সাথে এসেছে তিপরা মথা। কারণ সবাই বুঝে গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়া দেশকে কেউ সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। ২০১৪'র আগে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে বড়সর প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশ ক্রমশ উন্নতির দিশায় এগিয়ে চলছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে। 
                         মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচাৰ্য, সহ সভাপতি সুবল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক অমিত রক্ষিত, পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেব, পূর্ব ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মা, রামনগর উপনির্বাচনের প্রার্থী তথা আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, যুব মোর্চার সভাপতি তথা বিষয়ক সুশান্ত দেব সহ মন্ত্রী, বিধায়ক ও দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ