Advertisement

Responsive Advertisement

মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে: রতন লাল নাথ


আগরতলা, ১২জুন : রাজ্যে আরও অধিক মাত্রায় ধান এবং সবজি উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তা পূরণে উদ্দেশ্যে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর। কৃষির নানা বিষয় নিয়ে বুধবার রাজ্য ভিত্তিক পর্যালোচনা এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী আগরতলার এডি নগর এলাকার কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে। এই পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ, সচিব অপূর্ব রায়, কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, উদ্যান বাগিচা ফসল এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের অধিকর্তা ড: ফনি ভূষণ জমাতিয়া, কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান জয়েন ডিরেক্টর ড: উত্তম সাহা, জয়েন ডিরেক্টর রাজীব দেববর্মা শহর জেলা এবং কৃষি মহকুমা স্তরের আধিকারিকরা। 
 রাজ্যভিত্তিক এই পর্যালোচনা বৈঠকে দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম খতিয়ে দেখা ও কৃষকদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পগুলির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। একই সাথে ২০২৩-২৪ বছরে রাজ্যের কৃষির উৎপাদন এবং ২০২৪-২৫অর্থবছরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
 এদিন পর্যালোচনা বৈঠক শেষে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ জানান ধান এবং ফসল উৎপাদনে ২০২৩-২৪অর্থবছরে রাজ্যের লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল তার কতটা পূরণ করা হয়েছে এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজ্যের লক্ষ্যমাত্রা কি নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তিনি আরো জানান ধান উৎপাদনের দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা, রাজ্যে প্রতি হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার ৪৫৯ কিলো ধান উৎপন্ন হয় ২০২৩-২৪ সালে রাজ্যের ধান উৎপাদন হয়েছে ৭ লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিক টন। ২০২৪-২৫ সালে ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন। 
কৃষিমন্ত্রী আরও জানান সিপাহীজলা জেলা গোমতী জেলা এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা ধান ও ফসল উৎপাদনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য মাত্রা অতিক্রম করে ফেলেছে খোয়াই ধলাই এবং ঊনকোটি জেলা ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু পশ্চিম জেলা এবং উত্তর জেলা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। এদিন মন্ত্রী আরো জানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ বিভিন্ন বীমা কোম্পানির মাধ্যমে দেওয়া হয়, এর জন্য বীমা কোম্পানিকে বছরে ৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু কৃষকরা বছরে সাহায্য এর চেয়ে কিছুটা কম পান, বিষয়টি নজরে রেখে বীমা কোম্পানিকে এড়িয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। তিনি আরো জানান এখন থেকে কোন প্রকল্পের টাকা অব্যায়িত রাখা যাবে না, রাজ্যে একাধিক কৃষি মার্কেট গড়ে তোলা হবে বলেও জানান কৃষি মন্ত্রী রতন লাল নাথ। পাশাপাশি মন্ত্রী আরো বলেন রাজ্যের দিন দিন কৃষি জমির পরিমাণ কমছে, কিন্তু চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। তাই একদিকে যেমন উচ্চ ফলনশীল জাতের শাকসবজি ও ফসল চাষ করতে হবে তেমনি আধুনিক কৃষি পদ্ধতি এবং যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দপ্তর এই দিকটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষি কাজ করার জন্য কৃষকদের একদিকে উৎসাহ দিচ্ছে পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করছে। সেই সঙ্গে মন্ত্রী আরো জানান তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি শপথ গ্রহণের পর প্রথম যে স্বাক্ষরটি করেছেন তা কৃষকদের কল্যাণ সংক্রান্ত বিষয়ে। 
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ দিনের রাজ্য স্তরের এই পর্যালোচনা বৈঠকটি পুরোপুরি সফল হয়েছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। বিশেষ করে এই গবেষণা কেন্দ্রের সকল স্তরের আধিকারিক এবং কর্মচারীরা রাজ্যস্তরের এই কর্মসূচি টিকেট সফল করার জন্য ব্যাপক কাজ করেছেন। ফলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কৃষি আধিকারিকদের কোনসমস্যা হয়নি। এমন সুন্দর ভাবে বৈঠকের আয়োজন করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত কৃষি আধিকারিকরা কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদেরধন্যবাদ জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ