আগরতলা, ১৪ জুলাই : এবারের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম মৃত্যু হল দক্ষিণ জেলা পরিষদ নির্বাচনের সিপিআইএম দলের প্রার্থী বাদল শীল। গত ১২ জুলাই চুত্তাখলা বাজারে প্রকাশ্য দিবালোকে সমাজবিরোধীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাদল শীলের ওপর অত্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক পেছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই হত্যাকান্ডটি সংগঠিত করে। সেই সময় তার মাথায় পরপর আঘাত করার ফলে তিনি লুটিয়ে পড়েন। আতংকিত বাজার মানুষ সেই সময় পালিয়ে গেলেও পরে খবর পেয়ে সিপিআইএম সদস্যরা ছুটে এসে বাদলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে জেলা হাসপাতালে তারপর আশংকাজনক অবস্থায় জিবি হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা মস্তিসকে অস্ত্রপচারও করেন কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল দুপুরে২-৩৫ মিনিটে বাদল শীল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। রবিবার ময়না তদন্তের পর বাদল শীলের দেহ সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির অফিসে আনা হয়। সেখানে বাদল শীলের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার, রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য পবিত্র কর, নারায়ণ কর,মানিক দে সহ সমস্ত নেতৃত্ব। পরে বাদল শীলের মৃত দেহ নিয়ে বিধানসভার বিরোধীদলনেতা জিতেন্দ্রচৌধুরী, প্রাক্তন বিধায়ক সুধন দাস মহকুমা সম্পাদক তাপস দত্ত ও কৃষকনেতা বাবুল দেবনাথ বিলোনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।তার আগে সংগঠিত হয় শোক মিছিল।
পরে বাদল শীলের খুনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সারাভারত কৃষক সভার ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর বলেন, ওরা ভয় পেয়েছে। এই ভয় থেকেই ওরা আক্রমনে নামবে এই আশংকা করে আমরা নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে ছিলাম তাঁরা শোনেননি। তিনি বলেন এই হত্যার দায় নির্বাচন কমিশন ও বিজেপি দলকে নিতে হবে। তিনি বলেন বাদল আমাদের দলের ও কৃষকসভার সামনের সারির নেতৃত্ব ছিলেন। পবিত্র কর বলেন শিক্ষক হিসেবে দারুণ সফল ছিলেন। ১০৩২৩ শিক্ষকদের সাথে চাকরি চলে যাবার পর সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে সংগঠনের কাজ করেছেন। দলকে মজবুত করেছেন।ছিলেন শ্রীরামপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক। পবিত্র কর বলেন কৃষক সভার দুর্দান্ত কর্মী হিসেবে কৃষকদের সংগঠিত করার কাজ অসাধারণভাবে করছিলেন।এই বিজেপির শাসনে একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছিলেন বাদল। ১২ তারিখ পঞ্চায়েতের মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁর ও সুধন দাসের নেতৃত্বাধীন মিছিল পুলিশের সামনেই আক্রান্ত হয়।মিছিল থেকেই প্রতিরোধ হয়। সেদিন বিকেলে
বাবুল ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে ফেরার সময় আক্রান্ত হন। পবিত্র কর বলেন এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নামধাম সব প্রকাশিত, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নির্বাচন কমিশন এই হত্যার দায় এড়াতে পারবেন না। তিনি বলেন এই ত্রিস্তরীও পঞ্চায়েতকে আবার প্রহসনে পরিণত করতে সমস্ত ঘুঁটি যে সাজানো হয়েছে তা এই হত্যার মাধ্যমেই প্রকাশ হয়ে পড়েছে। সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে পবিত্র কর দাবি জানিয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ