Advertisement

Responsive Advertisement

সরকারের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানালা আমরা বাঙালি দল

আগরতলা, ২৪ জুলাই : আগরতলার শিবনগরস্থিত আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল। তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ, অশোক কুমার দাস, গীতাঞ্জলি দেবী, সমর দেবনাথ,বিমল দাস প্রমুখ।রাজ্য সরকার একদিকে বলছে রাজ্যে শান্তি শৃংখলা আছে আবার রাজ্যের রাজনৈতিক দল গুলোকে বাইরে অর্থাৎ শহরের বুকে নিরাপত্তা জনিত কারণে মিছিল মিটিং করার অনুমতি দিচ্ছে না। আমরা দেখলাম বিরোধী দল গুলোর নেতৃত্বদেরকেও গন্ডাছড়া যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ প্রশাসন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ও অংশ গ্ৰহণে বাঁধা দান করা হচ্ছে। আমরা বাঙালী দল থেকে আগামী বৃহস্পতিবার (২৫/৭/২৪ ইং) তারিখে কিছু দাবি নিয়ে আগরতলা শহরে মিছিল ও পথসভা করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল।প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জনিত কারণে এই মুহূর্তে মিছিল মিটিং করা যাবে না বলে জানিয়েছে।এটা তো রাজনৈতিক দলের অধিকার হরণ। এই ধরনের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের তা মেনে নেয়া যায়না। এমনকি গন্ডাছড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে যে সন্ত্রাস সংঘঠিত হয়েছে তার খবরাখবর নিতে সাংবাদিক সহ ক্ষমতাসীন দলের বাইরে অন্য কোন রাজনৈতিক নেতাদের যেতে দেয়া হচ্ছে না তা মেনে নেয়া যায় না। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক কর্তব্য থাকে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো।আই যেহেতু রাজনৈতিক দল গুলো কে গন্ড ছড়ায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না তাই শহরে মিছিল মিটিং ও জনসভা করে পঞ্চায়েত ভোটের মুহূর্তে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হোক তাই বোধহয় সরকার চায় না। গত ১২ ই জুলাই পরমেশ্বর রিয়াং এর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর আগেই পরমেশ্বর রিয়াং এর ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের পুলিশ আগেই গ্ৰেপ্তার করে। এরপর ও এলাকাবাসী পরমেশ্বর রিয়াং এর মৃত্যুর খবর শুনে কিছু গন্ডগোল হতে পারে অনুমান করে স্থানীয় শাসক দলের নেতা ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে এলাকার নিরাপত্তা প্রার্থনা করে। অথচ স্থানীয় দের অনুরোধকে মান্যতা দিয়ে প্রশাসন কেন সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এলাকাবাসীর অনুমান হচ্ছে কিছু দিন আগে তিপ্রা মাথার সুপ্রীমো বলেছেন এডিসিতে জনজাতি ছাড়া কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড় দেওয়া হবে না।তাই পরমেশ্বর রিয়াং মৃত্যুর সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আক্রমণকারীরা কয়েকটি গ্ৰুপে বিভক্ত হয়ে এক এক পাড়ায় একেকটি গ্ৰুপ ঢুকে বাড়িঘরে দোকান পাটে গবাদিপশু সহ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে।অথচ ঘটনার সময় স্থানীয় দের কথা অনুযায়ী ও সোশ্যাল মিডিয়ার খবর অনুযায়ী ঘটনার সময় প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনি। যথেষ্ট পরিমাণ ফৌজ নেয় বলে অর্থাৎ হাতে গোনা কয়েকজন ফৌজ নিয়ে তাদের সাথে মোকাবিলা করা যাবে না বলে বরং দূর থেকে তামাশা দেখেছে। অথচ ঘটনার ১০/১২ দিন সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে আক্রমণকারীদের গ্ৰেপ্তারের জন্য প্রশাসনের কাছে চাপ সৃষ্টি করেনি। আবার পুলিশ প্রশাসন ও এখন পর্যন্ত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোন মামলা গ্রহণ করে নি।এর আগে লাল সাদা আমলের মতো বিপ্লব দেবের আমলেও আক্রমণকারীরা রাষ্ট্রীয় পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় কোন আমলেই বাঙালীরা বিচার পায়নি। বরং দেশভাগের বলি বাঙালী এডিসির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নিজেদের সব কিছু ফেলে প্রাণ ভয়ে শহরাঞ্চলের চলে আসে। আবার কেউ শরণার্থীর মতো দিন কাটাচ্ছেন।এই শরণার্থীর একটি অংশ ফরেস্টের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করে আসছিল তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য পেকুয়া ছড়াতে হুলিয়া জারি করে।যে ফরেস্টের জমিতে কেউ থাকতে পারবে না। অথচ জনজাতি অংশের লোকদের এক তরফা ভাবে পাট্টা দিয়েছে। এই হলো সব আমলেই বাঙালীদের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ।বহিরাজ্যের ব্রু শরণার্থীদের দ্বারা বাঙালীরা আক্রান্ত হওয়ার পর শান্তি ফেরানোর জন্য তাদের কে ছয়শত কোটি টাকা প্যাকেজ সহ ঘর বাড়ি করে দেওয়া হয়। অথচ বাঙালীদের ভাগ্যে কিছুই জুটেনি। গন্ডা ছড়ায় মৃত পরমেশ্বর রিয়াং কে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ছয় লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যতটুকু খবর আপাতত ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে ।ক্ষতির তুলনায় সরকার টাকা বরাদ্দ করেছে অতি নগণ্য মাত্র এক কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সেখানে ও বিমাতৃসুলভ আচরণ।আজ পর্যন্ত পূর্ব ত্রিপুরা আসনের লোকসভার সদস্যা গন্ডাছড়া এলাকা সফরের প্রয়োজনীয়ত বোধ করেননি। শুধু তাই নয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও গন্ডাছড়া সফর করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোকে সান্ত্বনা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। অথচ তিপ্রা মাথার সুপ্রীমো পরমেশ্বর রিয়াং এর মৃত্যুর পর তাদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে সান্ত্বনা দিয়ে আসছেন। যদিও বাঙালীদের প্রতি কোন বক্তব্য রাখেননি। ত্রিপুরায় আশি সালের পর থেকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল গুলোর ভোট ব্যাংকের স্বার্থে অতিরিক্ত উপজাতি তোষণ নীতির কারণেই এবং আক্রমণকারীদের ছাড় দেওয়ার জন্য বার বার বাঙালীদের উপর আক্রমণ করার সাহস পাচ্ছে।এই ভাবে যদি চলতে থাকে তবে ভবিষ্যতে বাঙালীদের অবস্থা শিলং এর মতো হবে।যে শিলং শহরে এক সময়ে বাঙালীদের ব্যাবসা বাণিজ্য চাকরি সব কিছুই যখন কেড়ে নেয় ধীরে ধীরে করতে পারছে না তখন বাঁচার তাগিদে প্রাণ ভয়ে ভিন রাজ্যে চলে গেছে।তাই বাঙালী জাতি যদি রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে তবেই বোধ হয় মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবে।আর না হলে বার বার এই ধরনের আঘাত খেয়েই বাঁচতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ