আগরতলা, ২ আগস্ট : অন্যান্য ফসলের মত আর্থিকভাবে লাভজনক এবং দীর্ঘমেয়াদী ফসল হচ্ছে নারিকেল। তাই সরকারের তৎপরতায় রাজ্যে এখন নতুন করে নারিকেল চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজ্যে আরবের ব্যাপক ভাবে নারকেল চাষ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ত্রিপুরায় নারকেল উন্নয়ন পর্ষদের একটি স্টেট সেন্টার চালু করার দাবী তুলেছেন সচেতন কৃষকরা।
নারিকেল চাষ বিষয়ক এক দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হল আগরতলায়। ভারত সরকারের নারিকেল উন্নয়ন বোর্ডের ত্রিপুরা শাখা ও আগরতলার পার্শবর্তী নাগিছড়া এলাকার উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন হায়দ্রাবাদের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ম্যানেজমেন্ট অফ এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশনের ডিরেক্টর ড. এম শ্রীকান্ত, এই সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ড. ভেঙ্কটেশ্বর রাও, কেরালার নারকেল উন্নয়ন পর্ষদের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রমোদ কোরিয়ান, ত্রিপুরা সরকারের উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের ডিরেক্টর ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া, জয়েন্ট ডিরেক্টর শান্তনু দেববর্মা, ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ ডেপুটি ডিরেক্টর সুজিত দাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এ দিনের এই কর্মশালার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন উপস্থিত অতিথিরা। এই কর্মশালায় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার কৃষক, উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ন্যাশনাল সেন্টার ফর ম্যানেজমেন্ট অফ এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশনের ডিরেক্টর ড. এম শ্রীকান্ত বলেন ত্রিপুরা রাজ্যের কৃষকদের সামনে নারকেল চাষের বিশেষ সুবিধা এবং নারকেলকে ভিত্তি করে আর্থিক ভাবে উপকৃত হওয়ার যায়। শুধুমাত্র খাবার হিসেবেই নয় নারকেল থেকে নানা ধরনের অর্থকরি পণ্য তৈরি করা সম্ভব তা বিস্তারিত তুলে ধরার লক্ষ্যে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
নারকেল উন্নয়ন পর্ষদের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রমোদ কোরিয়ান নলেন, কৃষকদের জন্য নারকেল উন্নয়ন পর্ষদ কি কি কাজ করছে, বিশেষ করে রাজ্যের কৃষকদের কল্যাণে পরিষদের কি কি পরিকল্পনা রয়েছে তা তুলে ধরা হয় দিনের এই কর্মশালায়।
উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের ডিরেক্টর ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া বলেন, সরকার এবং বিশেষ করে উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তর রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নারকেল চাষের মাধ্যমে কি করে চাষির আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে এই লক্ষ্যে কর্মশালা করা হয়েছে।
উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ড. রাজীব ঘোষ বলেন, এই গবেষণা কেন্দ্রটি যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন রাজ্যে নারিকেল চাষের সম্প্রসারণের বিষয়টিকে লক্ষ্য রেখে চালু করা হয়েছিল। কৃষকদের বাগিচা ফসল চাষের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়ে আসছে এই গবেষণা কেন্দ্র থেকে।
এদিন উপস্থিত চাষিরা নারিকেল চাষ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে তাদের প্রশ্ন উপস্থিত বিশেষজ্ঞদের কাছে উপস্থাপন করেন। বিশেষজ্ঞরা তাদের প্রশ্নের জবাব দেন। পাশাপাশি চাষীদের তরফ থেকে আধিকারিকদের কাছে আহ্বান জানানো হয় ত্রিপুরা রাজ্যে নারকেল উন্নয়ন পর্ষদের একটি স্টেট সেন্টার চালু করার জন্য। এই সেন্টারটি চালু হলো নারকেল চাষীরা আরো অনেক বেশি সুবিধা পাবেন বলেও জানান। এর ফলে একদিকে যেমন নারিকেল চাষ নারকেল গাছের পরিচর্যা ও উন্নত জাতের নারকেল গাছ নিয়ে আসতে পারবে সংস্থাটি। কৃষকদেরও নারকেল চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে পারবে পাশাপাশি নারকেল কে ভিত্তি করে অন্যান্য শিল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা ও পরামর্শ পাওয়া যাবে সেন্টারের তরফে।
0 মন্তব্যসমূহ