আগরতলা, ১০অগাস্ট : শনিবার রাজধানী আগরতলার শিবনগরস্থিত আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত আক্রমণের বিরুদ্ধে আমরা বাঙালী দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হয়। যদি ও এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তা হলেও যেহেতু স্বাধীনতা তথা দেশভাগের আগে বর্তমান বাংলাদেশ ছিল অবিভক্ত ভারতের অংশ বিশেষ ও সেখানকার অধিবাসী বাঙালীদের সঙ্গে ত্রিপুরা,অসম, পশ্চিম বঙ্গ তথা ভারতে বসবাসকারী বাঙালীদের রক্তগত, ভাষা, কৃষ্টি -সংস্কৃতিগত একাত্মতা অতীতের মত আজও বিদ্যমান। সঙ্গত কারণেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের ঘটনার প্রভাব পড়েছে এতদ অঞ্চলে প্রবলভাবেই। এছাড়াও বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের সঙ্গে রয়েছে ভাষা, কৃষ্টি -সংস্কৃতির আদান-প্রদান, ব্যবসা বাণিজ্য, আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ বন্ধুত্ব পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক সহ অনেক কিছু। যদি ও বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কি করণীয় তা দেখার সম্পূর্ণ দায়ীত্ব ভারত সরকারের। এই প্রশ্নে ভারত সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে ভারতবাসী হিসেবে আমরা সবাই তাতে ঐক্যমত পোষণ করবে।তবে বাংলা দেশে কোটা তথা সরকারী চাকুরী বা সুযোগ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের মতো ইস্যুকে কেন্দ্র করে সংঘটিত আন্দোলনের সৃষ্টি হয়েছিল এবং এই আন্দোলনের বিক্ষোভ কে কেন্দ্র করে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেশ ছাড়তে হয়েছে।দেশ ছাড়ার পর মূহুর্তে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে যে ব্যাপক হিংসাশ্রয়ী আন্দোলনের সৃষ্টি হয়েছিল যার পরিণামে এ পর্যন্ত সরকারী বেসরকারী মতে প্রায় পাঁচ শতাধিক এর মতো লোকের মৃত্যু ও সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দু বাঙালী সহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী নিরীহ মানুষের মৃত্যু,ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস সহ বাংলাদেশ সৃষ্টির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তি এবং বাংলা দেশের জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টা তথা বাংলা সাহিত্যে একমাত্র নোবেলজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতি ভাঙচুর ঘটনা গুলো কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কারণ রবীন্দ্রনাথ যেমন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের স্ত্রষ্টা তেমনি আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীতের স্ত্রষ্টা।আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার বাংলা গানের ঊদ্দিপনায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। কাজেই উনাদের উপর আঘাত মানে বাঙালী জাতির অপমান। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বাংলা ভাষা সংস্কৃতি কৃষ্টি ঐতিহ্য মনীষীদের সাহায্য এগুলো ধ্বংস করার পেছনে রয়েছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। কারণ ছাত্র আন্দোলনের দাবি মেনে নেয়ার পর ও যে ভাবে হিংসাত্নক কার্যক্রম বেড়েছে তা খুবই উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্ব এক ছাতার তলায় এসে এক দেশ আরেক দেশের সাথে ব্যাবসা বাণিজ্য জড়িয়ে আছে।কাজেই এক দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর প্রভাব পাশ্ববর্তী দেশ সহ অন্যান্য দেশেও কম বেশি পড়বে। এমতাবস্থায় আমরা বাংলাদেশের চলমান সংকট নিরসনে বর্তমানে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসনের প্রধান নোবেল জয়ী মহম্মদ ইউনূস মহাশয়ের নিকট কামনা করছি। আমরা বাঙালী ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে মহাশয়ের কাছে আবেদন আমাদের প্রত্যাশা বাংলাদেশের হিন্দু বাঙালী সহ সমস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য আপনি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন রাখছি। বাংলা ভাষা কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাষ্টি ও প্রতিষ্টান সমূহের উপর আক্রমণ কারী ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অধিকার সহ মানুষের বাঁচার অধিকার, ভাষা কৃষ্টি সংস্কৃতি ধর্মাচার প্রতিষ্টা করতে সক্ষম হবেন বলে দলের তরফে আসা ব্যক্ত করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ