Advertisement

Responsive Advertisement

ত্রিপুরাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্যের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ১৯ আগস্ট: ত্রিপুরাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। তাঁর জীবন দর্শণ ও উন্নয়নশীল চিন্তাধারাকে আগামী প্রজন্মের কাছে নিয়ে যেতে পারলেই মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের জন্মদিবস উদযাপনের স্বার্থকতা থাকবে। রাজ্যের এমন কোন স্থান নেই সেখানে বীরবিক্রমের স্মৃতি জড়িত নেই। তিনি ছিলেন আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার। 
                     সোমবার আগরতলা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং হলে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের ১১৬ তম জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এবং উপস্থিত অতিথিগণ মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষাক্ষেত্রের বিকাশে ও ত্রিপুরার গৌরবময় সংস্কৃতি সংরক্ষনের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বিধায়ক রামপদ জমাতিয়াকে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা পুরস্কার স্বরূপ বিধায়ক রামপদ জমাতিয়ার হাতে পুস্পস্তবক, শাল, মানপত্র, স্মারক ও ১ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। 
                            অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর ত্রিপুরাকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। মূলত এই উদ্দেশ্যেই মহারাজা বহুবার বিশ্বভ্রমন করেন। বিশ্বের বহু রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ত্রিপুরা রাজ্যে তাঁর অভিজ্ঞতা বাস্তবায়িত করতে প্রচেষ্টা নিয়েছিলেন। তিনি বহু মূল্যবান বই লিখে গেছেন। যা সমাজকে এখনও সমৃদ্ধ করে। মহারাজা বীরবিক্রম আগরতলায় বিমান বন্দর স্থাপন করেছিলেন। যা বর্তমান সরকার মহারাজার প্রতি সম্মান জানিয়ে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের নামে করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য ভূমি সংস্কার আইন বলবৎ করেছিলেন। তিনিই প্রথম জনজাতিদের জুম চাষের পরিবর্তে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষবাষে উৎসাহিত করেন। তিনি কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।
                       অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা আরও বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরার রাজ পরিবারের প্রকৃত মূল্যায়ণ করেছে। বর্তমান সরকার রাজ পরিবার এবং জনজাতিদের উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে এসে আগরতলা বিমনবন্দরে মহারাজার পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেছেন। আগরতলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র কামান চৌমুহনী সংলগ্ন মহারাজা বীরবিক্রম চৌমুহনীর জিরো পয়েন্টে মহারাজা বীরবিক্রম মানিক্য বাহাদুরের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের বর্তমান সরকারই রাজ্যের জনজাতিদের প্রকৃত সম্মান দিয়েছে।
                       অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার জনজাতিদের উন্নয়নে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। বর্তমান রাজ্য সরকার ইতিহাসকে সম্মান দিতে জানে। যা বিগত দিনে লক্ষ্য করা যেত না। তিনি বলেন, রাজ্যের জনজাতি ছেলেমেয়েদের মেধার অভাব নেই। তারা তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
                    অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর ছিলেন প্রথম রাজ পরিবারের সদস্য যিনি রাজ পরিবারের গন্ডি পেরিয়ে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষালাভ করেন। মহারাজা বীর বিক্রম শাসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যক্ষেত্রে অবদান রেখে গেছেন। বর্তমান রাজ্য সরকার তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে তাঁর জন্মদিনকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। ২০২০ সাল থেকে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর স্মৃতি পুরস্কার চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি সাংসদ কৃতি দেবী দেববর্মণ বলেন, ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নুতন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। এটাই ছিল মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের মূল দৃষ্টিভঙ্গি। ত্রিপুরা রাজ্যে অগ্রগতির মূল শক্তি রাজ্যের আগামী প্রজন্ম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. সৌরিশ দেববর্মা। তিনি মহারাজা বীরবিক্রমের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা তপন কুমার দাস।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ