আগরতলা, ১৪ অক্টোবর: দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে পিবিপি হাসপাতালের বিশেষ সুনাম রয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এই হাসপাতালটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আজ আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ পন্থ (জিবিপি) হাসপাতালের ৬৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অতীতের জিবিপি হাসপাতাল আর বর্তমান সময়কালের জিবিপি হাসপাতালের মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পূর্বতন সময়ে জিবিপি হাসপাতালে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, সময়ের প্রয়োজন অনুসারে এখানে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের সাথে সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। আগরতলায় আগে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য একমাত্র ভি এম (বর্তমান আইজিএম) হাসপাতালই ভরসা ছিল। রোগীদের চাপের কারণে আরেকটি হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৬১ সালে জিবিপি হাসপাতালটি এখানে স্থাপিত হয়। উল্লেখ্য, ৬৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে জিবিপি হাসপাতালে নতুন একটি বিশেষ স্পেশালিটি ওয়ার্ড নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকার এবং ওএনজিসি'র সাথে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যসচিব জে কে সিনহা এবং ওএনজিসি'র অ্যাসেট ম্যানেজার তথা আঞ্চলিক অধিকর্তা কৃষ্ণ কুমারের মধ্যে এই মউ বিনিময় হয়। সংক্রামক রোগীদের চিকিৎসার জন্য ২০ শয্যাবিশিষ্ট এই স্পেশালিটি ওয়ার্ড নির্মাণে ওএনজিসি ব্যয় করবে ৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা আরও বলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত-বিকশিত ত্রিপুরা গড়ার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট মানদন্ড অনুসারে 'লক্ষ্য' পরিকল্পনায় সরকার কাজ করছে। ত্রিপুরায় মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ হবে এটা আগে ভাবাই যায় নি।
বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিনিয়োগের জন্য রাজ্যে বিনিয়োগকারীরা আসছেন। বাইরের রাজ্যে পাঠরত রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরাও সুপার স্পেশালিস্ট হয়ে রাজ্যে ফিরে আসতে চাইছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, বর্তমানে চিকিৎসার সব ব্যবস্থাই রাজ্যে রয়েছে। 'মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু' শীর্ষক কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচিতে অধিকাংশ মানুষই আসেন চিকিৎসা সাহায্যের জন্য। দেখা গেছে সাহায্য প্রার্থীদের ৯০ শতাংশেরই চিকিৎসা আমাদের রাজ্যে করা সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিবিপি হাসপাতালের প্রতি মানুষের যে আস্থা রয়েছে তা আরও বাড়াতে হবে। সমস্যা থাকবে, তার নিরসনও সম্ভব। রাজ্য সরকার সমস্যা নিরসনে আন্তরিক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, উত্তরোত্তর জিবিপি হাসপাতালের বিকাশ ঘটছে। আগামী ১১ বছর পর যখন জিবিপি হাসপাতালের ৭৫ বর্ষপূর্তি হবে তার জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ শুরু করতে হবে। কোভিড সময়কালে জিবিপি হাসপাতালের পরিষেবায় বহু মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে মুখ্যসচিব তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জিবিপি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন তথা বিধায়ক মীনারাণী সরকার, ওএনজিসি'র অ্যাসেট ম্যানেজার কৃষ্ণ কুমার, এজিএমসি'র প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. অনুপ কুমার সাহা, জিবিপি হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডা. তপন মজুমদার, ডা. এইচ পি শর্মা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. অরুনাভ দাশগুপ্ত।
0 মন্তব্যসমূহ