আগরতলা, ১৮ নভেম্বর: রাজ্য উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রে গিয়ে এই কেন্দ্রের কাজকর্ম খতিয়ে দেখার পাশাপাশি নিজের হাতে ড্রোন উড়িয়ে কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সোমবার এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাজধানী আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকার রাজ্য উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রে অত্যাধুনিক সুবিধা যুক্ত কনফারেন্স হলের উদ্বোধন করা হয়। এদিনের এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া, গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ, সুজিত দাস, ডেপুটি ডিরেক্টর ড. দীপক বৈদ্য সহ রাজ্যের ৮ জেলার উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের অফিসের ৮জন ডেপুটি ডিরেক্টর সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
মন্ত্রী একদিন গবেষণা কেন্দ্রে পৌঁছলে আধিকারিকরা ফুলের তোড়া এবং সাল দিয়ে বরণ করে নেন। তারপর মন্ত্রী অফিস প্রাঙ্গনে একটি রেড ওয়েল পা গাছের চারা রোপন করেন। ফলক উন্মোচন এর মধ্য দিয়ে অত্যাধুনিক সুবিধা যুক্ত কনফারেন্স হলের উদ্বোধন করেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের কৃষি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী আধিকারিক প্রয়াত ডঃ বাহারুল ইসলাম মজুমদারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
হলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী আধিকারিকদের নিয়েই দীর্ঘ সময় ধরে পর্যালোচনা বৈঠক করেন। এই বৈঠকে উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্মের খুঁটিনাটি বিষয় আধিকারিকদের কাছ থেকে জানেন। এরপর মন্ত্রী গবেষণা কেন্দ্রের বিভিন্ন হাইটেক নার্সারি এবং মাঠে যে সকল সবজি এবং ফসল পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করা হচ্ছে এই মাঠগুলো পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে মাঠে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গেও কথা বলেন মন্ত্রী। তাদের কাছ থেকে মাঠের বাস্তব চিত্র জানার চেষ্টা করেন।
এদিনের এই কর্মসূচি সম্পর্কে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের মোট জমির মাত্র ২৪ শতাংশ কৃষি জমি রয়েছে। বর্তমান সরকারের চেষ্টায় এই জমিগুলিতে নানা ধরনের ফুল ফল ও সবজি চাষ হচ্ছে। ভারত সরকার এবং ত্রিপুরা সরকারের লক্ষ্য ছিল সারাদেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা। ইতিমধ্যে রাজ্যের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এখন তারা বাড়তি আয় করছে। কৃষকদের যাতে আরো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষবাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে উন্নত জাতের বীজ ফল এবং সবজির চারা কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া যায় এর জন্য গবেষকরা প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। বিশেষ করে সারা দেশের মধ্যে একমাত্র ত্রিপুরা রাজ্যে আলুর দানা বীজ উৎপাদিত হচ্ছে। এই দানা বীজের ফলে অনেক কম খরচে উন্নত মানের আলু চাষ করতে পারছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে আলু চাষে আরো উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে আসা হয়েছে রাজ্যে, যার নাম এআরসি পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বীজ দিয়ে আলু চাষ করলে প্রথাগত আলু চাষের প্রায় তিনগুণ বেশি পরিমাণে আলু উৎপাদিত হয়। রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য রাজ্য উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। সবশেষে মন্ত্রী গবেষণা কেন্দ্রের ফল চাষের ব্লকটিও ঘুরে দেখেন।
0 মন্তব্যসমূহ