আগরতলা, ৭ নভেম্বর: জনজাতিদের সার্বিক কল্যাণে খুবই আন্তরিকভাবে কাজ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। শুধু মুখের কথা নয়, বাস্তবিকভাবেই জনজাতিদের কল্যাণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। জনজাতি ছেলেমেয়েদের গুণগত শিক্ষাদানের জন্যও এই সরকার বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেইক চৌমুহনী এসটি কর্পোরেশন মার্কেটে মহারাণী তুলসীবতি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট আয়োজিত ত্রিপুরী কালচারাল এন্ড ফুড ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, জনজাতিদের কল্যাণে এই সরকার খুবই আন্তরিক। এধরণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। জনজাতি অংশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও কৃষ্টি সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আজকের এই আয়োজন। রাজ্যে জনজাতিদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার সুবাদে আমি তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি প্রত্যক্ষ করেছি। এসব বিষয় সারা দেশের মধ্যে তুলে ধরার প্রয়োজন রয়েছে। হজাগিরি নৃত্য, মামিথা নৃত্য, লেবাং বুমানি নৃত্য, গড়িয়া নৃত্য, বিজু নৃত্য ইত্যাদি অনেক নৃত্য রয়েছে জনজাতিদের। আমাদের সরকারও তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে জনজাতিদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির আরো বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব গ্রহণের পর জনজাতিদের জন্য আলাদা মন্ত্রকের মাধ্যমে কাজ করছেন। বিশেষ করে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সমস্ত জনজাতি অংশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তিনি। সেই দিশায় জনজাতি কল্যাণে কাজ করছে ত্রিপুরা সরকারও। আগে উপজাতি কল্যাণ দপ্তর বলা হতো। এখন জনজাতি কল্যাণ দপ্তর বলা হয়। ২০১৮ সালে এই সরকার আসার পর উপজাতি কল্যাণ দপ্তর নাম বদলে জনজাতি কল্যাণ দপ্তর করা হয়েছে। মহারাজা বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের উদ্যোগে আগরতলার সিঙ্গারবিলে এয়ারপোর্ট স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। এরআগে রাজ্যে অনেক সরকার আসলেও তাদের অবদানের মূল্যায়ন করা হয় নি। কিন্তু আমাদের সরকার আসার পর মহারাজার অবদানের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়। তাই উনার নামে আগরতলা এয়ারপোর্টের নাম মহারাজা বীর বিক্রম এয়ারপোর্ট রাখা হয়েছে। সেখানে তাঁর মর্মর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। যার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর মহারাজার জন্মদিন ১৯ আগস্টে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সরকার আসার পর জনজাতিদের সম্মান দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সরকার আন্তরিকভাবে জনজাতি কল্যাণে কাজ করছে। এর পাশাপাশি আমরা কেন্দ্রের কাছে এডিসির নাম পরিবর্তন করে তিপরা টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল করা এবং এডিসিতে আসন সংখ্যা ২৮ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করার জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করেছি। আমরা ১২টি ব্লককে এসপিরেশনাল ব্লক হিসাবে ঘোষণা করেছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় বলছেন যে জনজাতি সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ছাড়া একটি রাজ্য বা দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে জনজাতি ছেলেমেয়েদের গুণগত শিক্ষা প্রদান করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে সরকার। এজন্য আরো একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল সারা রাজ্যে গড়ে তোলা হচ্ছে। জনজাতি অংশের মানুষকে সম্মান প্রদানে তাদের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করা হয়েছে। দীর্ঘ বছরের রিয়াং জনজাতিদের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। এছাড়া ত্রিপুরা থেকে উগ্রপন্থা সমস্যা একেবারে নিরসন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, মহারাণী তুলসীবতি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি বিপিন দেববর্মা সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ