আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর : রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত কুমার পালের চেষ্টায় ন্যায় পেলেন উদয়পুরের প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক মৃত শহিদুল মিঞার স্ত্রী অর্জুনা বেগম।
ত্রিপুরা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১মার্চ ১৯৮ ইং তারিখ থেকে গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স স্কিম ১৯৮৩. চালু করেন। ঐ স্কিমের ১.১ ধারায় মেম্বার্গীদের জন্য বলা আছে যে সকল সরকারী কর্মচারী ঐ স্কিম ঘোষণা হওয়ার পর সরকারী চাকুরীতে নিযুক্ত হইয়াছেন তাহারা প্রত্যেকেই ঐ স্কিমে বাধ্যতামূলক ভাবে আওতাভুক্ত। সরকারী কর্মচারী ব্যতিত, ডেইলি রেটেড কর্মীগন, আধা সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত কর্মচারী, আংশিক সময়ের জন্য বা এডহক কর্মচারীগণ ঐ ইন্সুরেন্স স্কিমের আওতাভুক্ত হইবেনা
উদয়পুর নিবাসী জনৈক মহম্মদ শহিদুল মিশ্রণ মাসিক ৬০০ শত টাকা স্থির বেতনে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরে প্রাথমিক বিভাগে সহকারী শিক্ষক হিসাবে ০৩/১২/১৯৯০ ইং সনে জয়েন করেন ৬ বৎসর স্থায়িত্বক্রমে। মোট ৬ বৎসরের অধিক সময় চাকুরী করার পর ১৯৯৬ ইং সন হইতে শহিদুল মিঞা সহ মোট ৪৪৩ জন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়মিত বেতন ক্রমে উন্নিত হন। মহম্মদ শহিদুল মিঞা ৩০ বৎসরের অধিক সময়কাল পর্যন্ত চাকুরী করার পর ১০/০৭/২০২১ ইং সনে কর্মরত অবস্থায় মারা যান।
মহম্মদ শহিদুল মিঞার মৃত্যুতে মৃতের স্ত্রী অর্জুনা বেগম পারিবারিক পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সহ গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সের ১,৫০,০০০ লক্ষ টাকার দাবী করেন। A.G(A & F) Tripura পারিবারিক পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সবই মজুর করেন, কিন্তু বিদ্যালয় শিক্ষা পরিদর্শক, উদয়পুর বিভাগ শহিদুলের পরিবার কে গ্রুপ ইন্সুরেন্স এর প্রাপ্য ১,৫০,০০০ টাকা কুযুক্তি দেখিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। বিদ্যালয় পরিদর্শক এর মতে মৃতের service book এ until further order এর কোনো এন্ট্রি নেই, তাই সে নিয়মিত কর্মচারী হিসাবে গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স এ অন্তর্ভুক্ত নহে। মৃতের পরিবার তার দাবী সপক্ষে ২০১৬ সনের ইনকাম ট্যাক্স সংক্রান্ত ফর্ম ১৬দাখিল করেন। ফর্ম ১৬ এ উল্লেখ আছে যে মৃত শহিদুলের বেতন থেকে ২০১৬ আর্থিক বৎসরের গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স এর প্রিমিয়াম বাবদ মোট ১৮০০ টাকা কার্টিয়া নেন। কিঞ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শক ফর্ম ১৬ এর উল্লেখিত ইন্স্যুরেন্স এর চাদা হিসাবে ১৮০০ টাকা কে অগ্রাহ্য করেন। এবং তার মতে ফরম ১৬ তে যে চাঁদা র মূল্য উল্লেখ আছে, তাহা মৃত কর্মচারী জালিয়াতি করে ট্যাক্স ফাঁকি দেবার জন্য উল্লেখ করিয়াছেন, তাই ফরম ১৬ বৈধ নহে। মৃতের পরিবার বহু দরবার করিয়া ও ইন্সুরেন্স এর টাকা আদায় করিতে অসমর্থ হন এবং মৃতের পরিবার তার দাবী আদায়ের জন্য উকিল নোটিশ দিয়ে ও অসমর্থ হন। পরিশেষে মৃতের পরিবার অর্জুনা বেগম, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মহা মান্য ত্রিপুরা হাই কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।
২৮ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখে এ মামলাটি বিচারপতি টি. অমরনাথ গৌড়র বেঞ্চ এ শুনানি কালে বিচারপতি উভয় পক্ষের সুদীর্ঘ সওয়াল জবাব'র পর রিট পিটিশনটী মৃতের পরিবার অর্জুনা বেগম'র পক্ষে রায় দেন এবং সরকারী পক্ষের আধিকারিকদের গ্রুপ ইন্সুরেন্স এর প্রাপ্য ১,৫০,০০০ টাকা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সহ জাজমেন্ট এন্ড অর্ডার এর কপি পাওয়ার তারিখ থেকে ২ মাসের মধ্যে যেন আবেদনকারীকে প্রদান করার জন্য আদেশ দেন। এই মামলাটি পরিচালনা করেন রাজ্যের বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত কুমার পাল। উনাকে সাহায্য করেন অমিত বরণ সরকার, সুবীর বৈদ্য, এবং আভনন্দন পাল সৌগত দত্ত, হীরালাল দেববর্মা, মৈত্রী মজুমদার এবং, মধুরিমা চন্দ আইনজীবীগণ।
0 মন্তব্যসমূহ