আগরতলা, ১৭, ডিসেম্বর : কেরালাকে যেভাবে কোনঠাসা করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার, তার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রচারের অঙ্গ হিসেবে আজ শকুন্তলা রোডে কেরালার বিরুদ্ধে চক্রান্তের প্রতিবাদ করলো রাজ্য সি আই টি ইউ, রাজ্য কৃষক সভা ত্রিপুরা উপজাতি গণমুক্তি পরিষদ ও রাজ্যের ক্ষেত মজুর ইউনিয়ন। ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কেরালা দেশের সামনে বারবার বিকল্প পথ দেখিয়ে এসেছে আজও আসছে। যে কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৫৭থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত কেরালায় ই এম এস নামমুদ্রিপাদ নেতৃত্বাধিন প্রথম কমিউনিস্ট সরকারের সময় থেকে, তিনিই এই কর্মকাণ্ডের পথপ্রদর্শক ছিলেন। যা পরবর্তীতে অন্যান্য বামফ্রন্ট সরকারগুলো দেখিয়ে যাচ্ছে কেরালায় এভাবেই কেরালায় বামফ্রন্ট সরকারের কর্মকাণ্ড ব্যাখ্যা করে রাজ্য কৃষক সভার সম্পাদক পবিত্র কর। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন , বিকল্পধারার অর্থনৈতিক পথ দেখিয়ে যাওয়ার পরও কেন্দ্রীয় সরকার ধারাবাহিকভাবে কেরালা সরকারকে নানাভাবে বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে বেকায়দায় ফেলে দেবার চেষ্টা করছে এবং তা, প্রকাশ্যেই। অসাধারণ তথ্য সমৃদ্ধ এই প্রতিবাদ সভায় তিনি বলেন এই রাজ্য থেকে কর আদায়ের পঞ্চাশ শতাংশ দাবি করেছে কেরালা সরকার। কি ভাবে কেরালাকে নিষ্পেষণ করে চলেছে তার নিদর্শন দিয়ে তিনি বলেন কেরালার দেওয়া বিকল্প পথ মোদী -বিজেপি সরকার গ্ৰহন তো করছেই না উপরুন্তু কেরালার মানুষের উন্নয়নের জন্য যত পরিকল্পনা নিচ্ছে কেরালার বামফ্রন্ট সরকার, সেগুলো যাতে প্রয়োগ করতে না পারে তা নানা ভাবে বাধাদেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি -আর এস এস কেন্দ্রীয় সরকার। কেরালার মানুষের প্রতি পদে পদে অবিচার করে চলেছে। তিনি বলেন কেরালার সমস্ত উন্নয়নের কার্যক্রমকে গলাটিপে মেরে দেবার চেষ্টা করে চলেছে মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি আর এসএস সরকার। শুধুমাত্র উন্নয়নমূলক কাজেই বাধার সৃষ্টি করেছে তানয় প্রাকৃতিক দুর্যোগে, বন্যায়, ভূমিধ্বসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কেরালার মানুষের সাহায্যের ক্ষেত্রেও তা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে পবিত্র কর বলেন প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার করে ঘুরেই দেখেন, মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সভা করে যে আশ্বাস দেন দিল্লি ফিরে গিয়েই সেখান থেকে নিজেকে সড়িয়ে নিচ্ছেন। তিনি বলেন কেরালার মানুষ এই অন্যায় মেনে নেবে না। পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন এই ব্যাপারে একেবারে হুবহু ত্রিপুরার বন্যার্তদের মানুষের প্রতি একই ব্যবহার করে যাচ্ছে বিজেপি-আর এস এসের দিল্লির সরকার তাকে সাহায্য করছে এই রাজ্যের সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এখন বন্যার্তদের সাহায্যের কথা মাথায় না রেখে গান বাজনায় মেতেছেন।সি আই টিইউর রাজ্য সম্পাদক শঙ্কর দত্ত বলেন মোট বাজেটের মাত্র ১৮ শতাংশ মাত্র জনগণের, অন্যদিকে কেরালা নিজেদের বাজেট ব্যয়ের ৬২ শতাংশ নিজেরাই যোগার করেন। কেরালার কোটি কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। তিনি বলেন আবাস যোজনার টাকা এখানে মন্ডল লুটপাট করে নিচ্ছে আর কেরালা ৫ লাখ কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার সাড়ে চার লাখ ঘর ইতিমধ্যেই দিয়ে দেয়া হয়েছে। সামাজিকভাতা থেকে পেনশন প্রদান সব কিছুতেই কেরালা এগিয়ে, কৃষি শ্রমিকদের কথা কেন্দ্রীয় সরকার ভাবেনি কিন্তু কেরালা সরকার ভেবেছেন। অর্থনৈতিক অবরোধ তো আছেই সেই সাথে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে শান্ত কেরালাকে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে, এসব রুখতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে জনসাধারণের কাছে প্রতিবাদে সামিল হতে শঙ্কর দত্ত আহ্বান জানান। গনমুক্তি পরিষদের সম্পাদক রাধাচরন দেববর্মা কেরালা সরকারকে যেভাবে নানাভাবে অবরোধ করছে তা অসাংবিধানিক, এতকিছুর মধ্যেও কেরালা রাজ্যবাসীর সহায়তায় কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য অপেক্ষা করেনা কিন্তু নিজের পাওনার জন্য দাবি তো জানাতেই হবে। তিনি বলেন এই রাজ্যে পুষ্পবন্ত প্রাসাদ নিয়ে হটাৎ একজনের লম্ফঝম্ফ বন্ধ হয়ে গেছে, কে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কাজ করে চলেছেন সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে।তাঁর অভিযোগ যেখানে রাজ্য সরকারের সাথে সহমতের ভিত্তিতে মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছে মথা, তিনি অভিযোগ করেন। সভাপতির ভাষণে মানিক দে বলেন কেরালা মডেল রাজ্য,আর গুজরাট বড়লোক ও অত্যাচারের মডেল রাজ্য। তিনি বলেন যে রাজ্যটির সরকার ৯০ শতাংশ মানুষের জন্য কাজ করছে সেখানে সেই সরকারটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে একটি রাষ্ট্রিও সরকার শুধু ২০২৬ সালের নির্বাচনে জিততে। তিনি অভিযোগ করেন এই কাজে সহায়তায় নেমেছেন রাজ্যপাল। সাংবিধানিক ক্ষমতা অপব্যবহার করে তিনি সংবিধানকেই বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে বিজেপি -আর এস এসের কর্মসূচি পালন করে চলেছেন। তিনি অন্যায়ভাবে বিধানসভায় গৃহীত জনগণের উন্নয়নকল্পে বিলগুলো আটকে রেখেছেন, অযাচিতভাবে, অসাংবিধানিক ও মোদী সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করে উচ্চ শিক্ষায় বাধার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর এসমস্ত কাজ উপভোগ করে চলেছে। দুঃখজনক হলেও এটা সত্যি যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউ ডি এফ এই বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে বলে মানিক দে অভিযোগ করেন।
0 মন্তব্যসমূহ