আগরতলা, ২০ জানুয়ারি: ‘নেশমুক্ত ত্রিপুরা’ (মাদকমুক্ত ত্রিপুরা) গঠনে সকল অংশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় মাদক মুক্ত কেন্দ্র স্থাপন করবে রাজ্য সরকার। নেশামুক্ত রাজ্য গড়ে তুলতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে।
সোমবার সিপাহীজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জে রাজ্যের প্রথম ২০০ শয্যা বিশিষ্ট সুসংহত মাদক মুক্ত কেন্দ্রের ভূমিপূজন করার পর একথা বলেন। এর পাশাপাশি এদিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশ্রামগঞ্জে জেলা পরিবহণ কার্যালয়ের নতুন ভবন ও সিপাহীজলা সার্কিট হাউসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশ্রামগঞ্জ বাজার থেকে চিকনছড়া হয়ে বরকোবাড়ি সড়ক, জম্পইজলা ব্লকের লাটিয়াছড়া উচ্চতর বিদ্যালয়ের নতুন ভবন এবং চড়িলামস্থিত অটল বিহারী বাজপেয়ী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ ও বাউন্ডারি ওয়ালের উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন এবং অ্যাক্ট ইস্ট নীতি ঘোষণা করেছেন। আমরাও প্রধানমন্ত্রী মোদির ভিশন অনুসরণ করে কাজ করছি। আমরা উন্নয়নের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময়ই সহজ জীবনযাপনের উপর গুরুত্ব দেন। পিএম - ডিভাইন স্কিমগুলিও রাজ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিধানসভায় অনেক বিধায়ক মাদক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মাদক সমস্যা মোকাবেলায় আমাদের সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ২০১৮ সালের আগে ত্রিপুরা মাদক-যুক্ত ছিল, কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর আমরা নেশা মুক্ত ত্রিপুরা (মাদকমুক্ত ত্রিপুরা) অভিযান ঘোষণা করেছি।
মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে রাজ্য সরকার মাদকাসক্ত যুবকদের মাদকাসক্তি কাটিয়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। স্কুল-কলেজে মাদকাসক্ত যুবদের চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি শিক্ষকদের এ ধরনের পড়ুয়াদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছি। এই সমস্যাটিকে চিহ্নিত করাও সমাধান করাও প্রত্যেকের দায়িত্ব। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের রাজ্যে একটি শক্তিশালী ক্লাব সংস্কৃতি রয়েছে এবং ক্লাব সদস্যদের সাথে বিভিন্ন বৈঠকে আমি তাদের মাদকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। সরকারের প্রচেষ্টাকে সহজ করার জন্য জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ খুবই প্রয়োজন।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এবার আমরা মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছি। ১২১.৯০ কোটি টাকা খরচ করে আমরা এই কেন্দ্রগুলি তৈরি করছি। এই নতুন নেশামুক্তি কেন্দ্রে একটি সুইমিং পুল, যোগব্যায়াম, সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম এবং আরও অনেক কিছুর মতো সুবিধা রাখা থাকবে। যা একটি রেফারেল সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। এটি একটি জি+৪ বিল্ডিং হবে। সব জেলায় একই ধরনের কেন্দ্র খোলা হবে। আমি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাছে এই প্রকল্পগুলি যথাসময়ে শেষ করার জন্য আহ্বান করছি। মাদকের প্রতি আমাদের জিরো-টলারেন্স নীতি রয়েছে এবং আমরা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিধায়ক সুশান্ত দেব, বিধায়ক কিশোর বর্মণ, বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব, বিধায়ক তফাজ্জল হোসেন, বিধায়ক সুবোধ দেববর্মা ও বিশ্বজিৎ কলই, রাজ্য সরকারের সচিব কিরণ গিত্তে, জেলাশাসক সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, এসপি বি জে রেড্ডি সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।
0 মন্তব্যসমূহ