আগরতলা, ১৬ মার্চ : এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রবিবার গোমতী জেলার আঠারোভোলা গ্রামীণ কৃষি বাজারের "ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন" এবং সুবিধাভোগীদের মধ্যে "কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ" করা হয়। বাজার সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ, প্রধান নির্বাহী সদস্য টিটিএএডিসি পূর্ণ চন্দ্র জামাতিয়া, কিল্লা বি সি'র ভাইস চেয়ারম্যান, কৃষ্ণ কান্ত জামাতিয়া, বিধায়ক রামপদ জামাতিয়া, গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরয়, কৃষি ও কৃষক কল্যান দপ্তরের অধিকর্তা ডঃ পি.বি. কৃষি ও কৃষক কল্যান দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী স্বপন কুমার দাস, কিল্লা আরডি ব্লক বাগান হরি মলসম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামীণ এবং পাহাড়ি এলাকার মানুষের জীবনের মান উন্নয়ন করা। এই জন্য সরকার কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য বিশেষভাবে কাজ করছে। কৃষকদের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হচ্ছে, নতুন প্রযুক্তিতে চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি গবেষকরা চেষ্টা করছেন কৃষিজাত ফসলের উৎপাদনের সময় কমিয়ে আনা এবং অধিক পরিমাণে ফলন হয় এমন সবজি ও ফসল চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন বর্তমান সরকারের সাত বছরে নতুন করে ১৪৪টি কৃষি বাজার নির্মাণের কাজ চলছে। 
আঠারোভোলা গ্রামীণ কৃষি বাজারের "ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি এদিন কৃষকদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পাওয়া টিলার, স্প্রে মেশিন সহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপতি বিতরণ করেন মন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিরা। ৮০ জন কৃষককে ভর্তুকিতে এই সামগ্রীগুলি বিতরণ করা হয়। দ্বিতল বিশিষ্ট এই বাজারটি নির্মাণে প্রায় দুই কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা খরচ হবে।
অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে মন্ত্রী শ্রী পদ্ধতিতে চাষ করা ধানের জমি, ভুট্টা ও গম ক্ষেত পরিদর্শন করেন। যদিও গোমতী জেলা কৃষিতে স্বয়ম্বর, তবে কিনলা ব্লকের কিছু কিছু জায়গা আছে এখনো পতিত হিসেবে পড়ে রয়েছে, এগুলোতে চাইলে কৃষি কাজ করা যায় তাই এই জমিগুলোতে যাতে কাজে লাগানো যায় এই বিষয় স্থানীয় কৃষি আধিকারিক এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। ৬০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে এই জায়গা পরিদর্শন করেন তিনি। এই এলাকার পার্শ্ববর্তী কিছু জমিতে জল জমে থাকে তাই চাষ করা যাচ্ছে না আবার কিছু জমিতে জল না পাওয়ার ফলে চাষ করা যাচ্ছে না। এই সমস্যার সমাধান করে জলে সুষম বন্টনের মাধ্যমে পুরো জমিতে চাষবাসের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। যে জমিতে জলের অভাব রয়েছে তাতে পিএম কুসুমের মাধ্যমে জলসা করে দেওয়া হবে বলে জানান।
এদিন কর্মসূচি শেষ লগ্নে তিনি দক্ষিণ বড়মুড়া পাহাড়ের চিল্লা ব্লকের অন্তর্গত পুসকুরনি বাড়ি গ্রামে যান। এই গ্রামটি এলাকার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু জায়গাতে অবস্থিত। এখানে প্রায় ৪৫টি জনজাতি পরিবার বসবাস করে। এই জায়গা থেকে একদিকে কিল্লা একদিকে অমরপুর এবং উদয়পুরের কিছু অংশ দেখা যায়। খুব সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র এটি, এখানে একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের পর। এই জায়গাটি পরিদর্শন করে মন্ত্রী জানান পর্যটন দপ্তরকে এই বিষয়ে রিপোর্ট দেবেন তিনি যাতে করে উঁচু এই জায়গাটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরা যায়। সেই সঙ্গে এই এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের যাতে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত করে আয় বৃদ্ধি করা যায় এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
0 মন্তব্যসমূহ