Advertisement

Responsive Advertisement

কৃষকদের দাবীর প্রেক্ষিতে আলু বীজ কেনার সরকারি মূল্য বৃদ্ধি করে ২৮ টাকা/কেজি হলো


আগরতলা, ১৯ মার্চ : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ত্রিপুরা রাজ্যের আটটি জেলায় মোট ৪০২ জন কৃষক কে এআরসি আলু বীজ বিতরণ করা হয়। এখানে উল্লেখ্য যে এআরসি পদ্ধতিতে গত বছর সর্বপ্রথম আলু চাষ করা হয়, গত বছর মোট ১০৪ জন কৃষককে এই পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য আলু ছাড়া বিতরণ করা হয়ে ছিল। হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র থেকে মোট পাঁচ জাতের এআরসি আলুর উচ্চ ফলনশীল বীজ যথাক্রমে কুফরী, মোহন, কুফরী হিমালিনী, কুফরী উদয়, কুফরী লিমা এবং কুফরী থর ২ এই জাতের আলুগুলো চাষীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল। এই পাঁচ জাতের কিছু পরিমাণ আলু বীজ পরীক্ষা মূলক ভাবে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী নাগিছড়া এলাকার রাজ্যিক উদ্যান এবং বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্রে প্রদর্শনী মূলক ভাবে চাষ করা হয়। প্রথম বছরের এই বীজ আলো থেকে উৎপাদিত আলুসরণ প্রথাগতভাবে চাষ করা আলুর ফলন থেকে অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে অত্যন্ত উৎসাহের সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবছর এই বীজ পাওয়ার জন্য তারা আগ্রহ প্রকাশ করেন। কৃষকদের উৎপাদিত এই বীজ আলু সরকারি ভাবে ত্রিপুরা হটি কর্পোরেশন লিমিটেডের মাধ্যমে কেনা হয়, প্রতি কেজি আলু বীজ ২৫ টাকা মূল্যে কিনা হয়েছিল। এই বীজ আলু ক্রয়ের পরতা রাজ্যের বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ অর্থাৎ হিমঘরে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে হিমগড় থেকে এই আলু বীজ বের করে গত রবি মরশুমে ৪০ মেট্রিক টন আলু ৪০০ জন কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়। রাজ্যের আটটি জেলা সাতাশটি কৃষি মহকুমা এই বীজ আলু বিতরণ করা হয়। এ বছর মার্চ মাসে এই আলু ফলনের পর দেখা যায় অবিশ্বাস্য রকম ভাবে বেশি উৎপাদন হয়েছে। রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা এআরসি আলুর মাঠ পরিদর্শন করেন এবং মাঠ দিবস কর্মসূচিতে অংশ নেন। দক্ষিণ জেলার বকাফা কৃষি মহাকুমার বেতাঘা যেখানে এআরসি আলু চাষ করা কৃষক সজল ভৌমিকের আলু চাষের জমি পরিদর্শন করে শস্য কর্তনের প্রাপ্ত একষট্টি দশমিক দুই মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর উৎপাদনশীলতা দেখে জানান এটি রাজ্যের আলু উৎপাদনে সর্বকালীন রেকর্ড। এই অঞ্চলের অন্যান্য এ আছি আলু চাষীদের সাথেও মন্ত্রী নতুন এই পদ্ধতিতে আলু চাষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং উচ্চ ফলনশীলতা নিয়ে সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেন। এই মাঠেই সমস্ত এআরসি কৃষকরা এবছর উৎপাদিত বীজ আলুর মূল্য যাতে আরো বাড়ানো হয় তাই মন্ত্রীর কাছে আহ্বান রাখেন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে এবছর বিজ আলুর দাম ২৮ টাকা প্রতি কেজি সরকারি ভাবে নির্ধারণ হয়। 
 এবছর বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত সম্ভাব্য ফলনের আনুমানিক গড় উৎপাদনশীলতা ৩৫.৫০৪ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর যা রাজ্যের পূর্বের গড় উৎপাদনশীলতার ১৯. ১৬ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর থেকে অনেক বেশি। বিভিন্ন জেলায় আলুর এই দ্বিগুণ এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রায় তিন গুণেরও বেশি ফলন পর্যবেক্ষণ করে রাজ্যে আরও অনেক বেশি সংখ্যক কৃষক এআরসি আলু চারা নিয়ে ভীষণভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের এই আবেদনের সাড়া দিয়ে দপ্তরের মন্ত্রী আগামী রবি মৌসুমে অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজ্যের ৪০০০ কৃষককে এই বীজ আলু দিয়ে চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। তাই আগামী রবি মৌসুমে ৪০০ মেট্রিক টন বীজ আলু কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যাতে আগামী অর্থবছরে চাষীদের মধ্যে নির্ধারিত পরিমাণ আলো বিতরণ করা সম্ভব হয়। এখানে উল্লেখ্য যে এই বছর রাজ্যের আট জেলায় প্রাপ্ত তত্ত্ব থেকে জানা যায় যে আনুমানিক প্রায় ৮৫৪ মেট্রিক টন বীজ আলু উৎপাদিত হয়েছে। এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে টিস্যু কালচার জাত চুল আলু চারাও গত রবি মৌসুমে ৩১ জন কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয় সেইসঙ্গে চারটি কেবিকে যথাক্রমে খোয়াই ধলাই ঊনকোটি গোমতী এবং সবজি উৎকর্ষ কেন্দ্র সি ই ভি বীরচন্দ্র মনুতে বিতরণ করা হয়। প্রায় ৩৬ হাজার ৫০০ টি আলুর চারা তাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল এবং অত্যন্ত ভালো ফলন পর্যবেক্ষণ করা যায়। বেতাগা এলাকার আরো একজন কৃষক কমল দেবনাথ সঙ্গম জাতের এআরসি আলু চারা লাগিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে একান্ন দশমিক দুই মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর উৎপাদনশীলতা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তার প্লেটের শস্য কাটার পর মহান জাতের আলুতে ৪৪. ৮ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টর নির্ধারিত হয়েছে এবছর এই বিজ আলুর দাম ৫০ টাকা প্রতি কেজি তীর করা হয়েছে। এআরসি বীজ আলু এবং আলুর চারা থেকে প্রাপ্ত গি জিরো বীজ আলু চাষের মাধ্যমে রাজ্যকে ২০২৯-৩০ অর্থবছরের মধ্যে বিজালু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে । যার মাধ্যমে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কথাই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ