আগরতলা, ২৩ এপ্রিল : ত্রিপুরা রাজ্যে নারী নিরাপত্তার চরম অবনতি এবং একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজিপি)-র কাছে ডেপুটেশন প্রদান করল ত্রিপুরা প্রদেশ মহিলা কংগ্রেস, কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের শোভা নেত্রী সর্বাণী ঘোষ চক্রবর্তী । রাজ্য জুড়ে নারীদের উপর নৃশংস অপরাধের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দলটি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়।
গত ২৫ এপ্রিল রাজ্যে একাধিক জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ। ১৪ বছরের এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ, ৪৫ বছরের চা বাগান কর্মী সুলোচনা বৈগ্যকে ধর্ষণ ও হত্যা করে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক মহিলাকে নির্মম যৌন হেনস্তা, ১৫ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ (বোধজংনগরে), চম্পাকনগরে ১২ বছরের এক নাবালিকা এবং মন্দিরঘাটে এক ৪৫ বছরের গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার, গান্ধীগ্রামে ১৩ বছরের এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে প্রকাশ্যে একটি অটোতে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি—এইসব ঘটনায় রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে বুধবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজিপি)-র কাছে ডেপুটেশন প্রদান করল ত্রিপুরা প্রদেশ মহিলা কংগ্রেস । এদিনের ডেপুটেশনে মহিলা কংগ্রেস নেত্রীদের অভিযোগ, গত সাত বছর ধরে রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তারা জনগণের কল্যাণে কোনো গঠনমূলক কাজ করেনি। বরং প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও নির্বাহী অদক্ষতার ফলে ত্রিপুরা আজ দেশের অন্যতম ‘সবচেয়ে খারাপভাবে পরিচালিত রাজ্য’-র তকমা পেয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যতই সুশাসনের কথা বলুন না কেন, বাস্তব চিত্র তার সম্পূর্ণ বিপরীত। রাজ্যে নারী নিরাপত্তা ভেঙে পড়েছে। তারা উল্লেখ করেন, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যে ১৪৪টি ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনা এবং ৩১টি নারী হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিধানসভায় স্বীকার করেছেন। ডেপুটেশনে আরও বলা হয়, “বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও” স্লোগান এবং “লক্ষপতি দিদি”র মতো প্রকল্প ত্রিপুরায় এখন শুধুই কটাক্ষের বস্তু। নারী নির্যাতনের ঘটনা প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, এবং এই দুরবস্থার মূল কারণ পুরো পুলিশ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার রাজনৈতিকীকরণ।
0 মন্তব্যসমূহ